ব্রিটেনের বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রথম ও একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ইংরেজি দৈনিক ডেইলি ড্যাজলিং ডন দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের অভিনন্দন বার্তা পেয়েছে। ডিজিটাল-ফার্স্ট এই দৈনিক সংবাদপত্রের দ্বিতীয় বার্ষিকীতেও এবারও কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রাখা হয়নি।
তারপরও খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এই মর্যাদাপূর্ণ অভিনন্দন বার্তা ব্রিটিশ এশিয়ান ও বাংলাদেশি কমিউনিটির ছাড়িয়ে ব্রিটেনের মূলধারায় গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর হিসেবে দৈনিকটির গ্রহণযোগ্যতা ও পাঠক প্রিয়তার একটি নজির বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ ডাউনিং স্ট্রিট থেকে, ২৯ মে ২০২৫ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর ডিরেক্ট কমিউনিকেশনস ইউনিটের প্রধানের ডেইলি ড্যাজলিং ডনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রকাশক মুনজের আহমেদ চৌধুরীর কাছে পাঠানো ব্রিটিশ সরকারের আনুষ্ঠানিক চিঠিতে ‘ডেইলি ড্যাজলিং ডন-এর অব্যাহত সাফল্যের জন্য শুভকামনা’ জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর শুভ কামনা জানানো চিঠিতে বলা হয়, ডেইলি ড্যাজলিং ডন পত্রিকাটি এত বিপুল সংখ্যক পাঠকের কাছে যেভাবে পৌঁছাতে পেরেছে, তা তিনি জেনেছেন।
উল্লেখ্য, মাত্র দুই বছরে ডেইলি ড্যাজলিং ডন ইউরোপসহ ব্রিটেনজুড়ে মূলধারার গণমাধ্যম হিসেবে নিজস্ব স্বকীয়তায় একটি অগ্রণী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
ব্রিটেনে এখন চার প্রজন্মের ১৫ লক্ষাধিক বাংলাদেশি ও ব্রিটিশ বাংলাদেশির বসবাস। কয়েক লাখ বাংলাদেশি ছড়িয়ে আছেন ইউরোপের দেশগুলোতে। ব্রিটেনে দ্বিতীয়, তৃতীয় প্রজন্মের বেশিরভাগ বাংলাদেশি বাংলা লিখতে পারা তো দূরের কথা, বাংলা লেখা পড়তেও পারে না। করোনায় ব্রিটেনের বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রবীণদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ, যারা বাংলা পত্রিকা, টিভির পাঠক ও দর্শক ছিলেন তারা প্রাণ হারিয়েছেন। নানা কারণে পাঠক না থাকার বাস্তবতায় এক যুগ আগে লন্ডন থেকে ১২টির বেশি সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা প্রকাশ হলেও আটটি বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো প্রকাশ হচ্ছে, তার মধ্যেও আছে অনিয়মিত। বন্ধ হয়ে গেছে বিলেতের অনেকগুলো বাংলা টিভি চ্যানেল।
বিশ্বজুড়েই রিল আর ভিডিওর ভিউ বাড়ছে, কমছে পত্রিকার পাঠক। যেখানে বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলো টিকতে না পেরে বন্ধ হয়ে গেছে, সেই বাস্তবতায় ২০২৩ সালের ২ জুন যাত্রা শুরু করে ব্রিটেনের বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইংরেজি দৈনিক ডেইলি ড্যাজলিং ডন। বাংলাদেশ ও ব্রিটেনে গত ২২ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন পেশাদার সাংবাদিকতায় রত মুনজের আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে তরুণ বাংলাদেশি সংবাদকর্মীদের টিম নিয়ে যাত্রা শুরু করে পত্রিকাটি। যাত্রা শুরুর কয়েক মাসের মধ্যেই গুগল অ্যানালিটিক্স, সিমিলার ওয়েবের তথ্য অনুযায়ী ব্রিটেনের বাংলা পত্রিকাগুলোর ওয়েব সংস্করণের পাঠক সংখ্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি পাঠক অর্জন ও ধরে রাখা পত্রিকাটি এখন ব্রিটেনের দক্ষিণ এশীয় শীর্ষ ও প্রাচীন সংবাদপত্রগুলোর সঙ্গে পাঠক সংখ্যার সমীকরণে উঠে এসেছে।
মুনজের চৌধুরী বলেন, ব্রিটেনে বাংলাদেশি বাংলাভাষী ও তাদের তিন-চারটি প্রজন্মের এখন বসবাস। ডেইলি ড্যাজলিং ডন প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ ছিল এ বিশাল জনগোষ্ঠীর একটিও পূর্ণাঙ্গ ইংরেজি সংবাদপত্র না থাকার শূন্যতা পূরণ করা। বাংলাদেশি ও বাংলাভাষী মানুষের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সংকট ও সম্ভাবনা ব্রিটেনের পলিসি লেভেলে পৌঁছে দেওয়া। ডেইলি ড্যাজলিং ডনে চালুর দুই বছর পর পাঠক-সমালোচকরা তুলনা করে দেখছেন, ব্রিটেনে ভারতীয়, পাকিস্তানি ও চাইনিজ বংশোদ্ভূতদের মালিকানায় যেসব এশিয়ান ইংরেজি সংবাদপত্র ব্রিটেনে এখন চালু আছে সেগুলোর কোনো কোনোটির বয়স ৪০ বছরেরও বেশি। কিন্তু সংবাদের মান, মৌলিকত্ব ও নতুনত্বে ডেইলি ড্যাজলিং ডন কতদূর পৌঁছাতে পেরেছে সেই বিচার করবেন পাঠকরা। যতগুলো এশিয়ান ইংরেজি সংবাদপত্র আছে ব্রিটেনে ডেইলি ড্যাজলিং ডনসহ, সেগুলোর কোনটি সার্বক্ষণিক আপডেট হয়, যখনকার খবর তখন পাঠককে জানায়, তা পাঠকরা যাচাই করে দেখবেন। ব্রিটেনে এশিয়ান জনগোষ্ঠী ৫.৫ মিলিয়নের অনেক বেশি। আমাদের টার্গেট এই পাঠকদের আস্থা ধরে রাখার পাশাপাশি মূলধারার পাঠক বাড়ানো।
মুনজের বলেন, যখন আমরা যাত্রা শুরু করি, তখন দুবছর পর খোদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেইলি ড্যাজলিং ডনকে অভিনন্দন জানাবেন, সেটি ছিল আমাদের ভাবনারও বাইরে। এই মুহূর্তে আমার অনুজপ্রতিম সহকর্মী কামরান আহমেদসহ সব সহকর্মী, পাঠক ও বিজ্ঞাপন দাতাদের প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এ পত্রিকার পেছনে কোনো ব্যবসায়িক গ্রুপ বা বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ নেই। তারপরও আমরা এতদূর আসতে পেরেছি, কারণ পাঠক আমাদের প্রতি আস্থা-ভরসা করতে পেরেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রিন্ট ও ই-পেপারের পাশাপাশি পত্রিকার সার্বক্ষণিক আপডেটেড অনলাইন ভার্সনটি মাত্র ২৩ মাসে গুগল সার্চ কনসল ডাটাসহ অন্য সমীক্ষা অনুযায়ী কোটি পাঠকের আস্থা অর্জনে সমর্থ হয়েছে।