দেশ ছেড়ে কানাডা ও আরব আমিরাতে প্রবেশে ব্যর্থ হওয়ার পর দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় ফিরেছেন বিতর্কের মুখে পদত্যাগ করা তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান।
রোববার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল চারটা ৫৫ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে-৫৮৬ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি।
দেশে ফিরলেও এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিমানবন্দর থেকে বের হননি মুরাদ। ইমিগ্রেশন বিভাগের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার প্রক্রিয়া মধ্যে রয়েছেন তিনি।
একাত্তরের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে মুঠোফোনে মুরাদ হাসান তার দেশে ফেরার কথা নিশ্চিত করে জানান, ঢাকার পৌছার পর ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সারছেন তিনি।
শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে কোথায় যাবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে জামালপুর চার আসনের এই সংসদ সদস্য পরিস্কার করে কিছু বলেননি। তবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি নিজ বাসাতে ফিরবেন।
বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, একজন সংসদ সদস্য হিসাবে মুরাদ হাসান লাল পাসপোর্ট বহন করছেন এবং সেই অনুযায়ী তিনি বিমানবন্দরে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন।
এর আগে ৭ ডিসেম্বর প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পর ৯ ডিসেম্বর রাতে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে কানাডার উদ্দেশ্য তিনি কূটনৈতিক পাসপোর্টে ঢাকা ত্যাগ করেন।
মুরাদ এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) স্থানীয় দুপুর ১.৩১ মিনিটে টরেন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন।
এসময় কানাডা ইমিগ্রেশন এবং বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান। দীর্ঘ সময় ধরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদে তাকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।
বিপুল সংখ্যক কানাডিয়ান নাগরিক কানাডায় তার প্রবেশের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন বলেও তাকে জানানো হয়।
পরে বাংলাদেশের এই সংসদ সদস্যকে কানাডার প্রবেশের সুযোগ না দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যগামী একটি ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয়।
টরেন্টো থেকে আরব আমিরাতের দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছান মুরাদ। তার পাসপোর্টে আরব আমিরাতের কোন ভিসা না থাকায় তিনি দেশটিতে প্রবেশ করতে পারেননি।
সেই সাথে বিমানবন্দরের ইমিগ্ৰেশন বিভাগের পক্ষ থেকে কানাডা থেকে ফেরত পাঠানোর কারণ জানতে চাওয়া হলে মুরাদ তার সঠিক কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
আরব আমিরাতে প্রবেশের অনুমতি না পাওয়ায় মুরাদ এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ঢাকার পথ ধরেন।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন ডা. মুরাদ হাসান।
এরপরই নায়ক ইমন ও নায়িকা মাহির সঙ্গে মুরাদের একটি অডিও ভাইরাল হয়, যেখানে তাকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় দু’জনের সঙ্গে কথা বলতে শোনা গেছে।
এরপরই মুরাদকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা গণমাধ্যমকে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
পরে ৭ ডিসেম্বর সকালে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন মুরাদ হাসান। বিকেলে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি।
একাত্তর/এসএ/এআর
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.