নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের সৃষ্টিকর্মকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত কাজ হওয়া দরকার। নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হুমায়ুন আহমেদ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এমনটাই বললেন। রোববার (১২ ডিসেম্বর) লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলের বলরুমে চতুর্থবারের এই আয়োজন করে শো টাইম মিউজিক। অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হুমায়ুন আহমেদ যেখানেই হাত দিয়েছেন, সেখানেই সোনা ফলিয়েছেন।
সম্মেলনের শুরু হয় নাচের মধ্য দিয়ে। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫০তম বর্ষের এই আয়োজনে হুমায়ুন আহমেদ নির্মিত 'আগুনের পরশমণি' চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হয়। এ ছাড়া দেখানো হয় হুমায়ুন আহমেদের উপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র। খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
এ ছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের দুই কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, শহীদ হাসান, বিশিষ্ট অভিনেত্রী ও হুমায়ুন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, লেখক ও প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম, বিশিষ্ট সাংবাদিক জ ই মামুন, ফোবানার চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরী, কমিউনিটি নেতা নাসির উদ্দিন খান পল, ব্যবসায়ী আহসান হাবিব, কবি ফকির ইলিয়াস, লেখক ফরহাদ হোসেন, সাংবাদিক ইব্রাহীম চৌধুরী ও লেখক মিশুক মুনির।
সম্মেলনের আহবায়ক ডা. চৌধুরী সারোয়ার হাসানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম আহবায়ক কবি রওশন হাসান ও সদস্য সচিব ইশতিয়াক রুপু। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন শো টাইম মিউজিকের কর্ণধার আলমগীর খান আলম। সঞ্চালনা করেন লেখক ও সাংবাদিক শামীম আল আমিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, হুমায়ুন আহমেদের মতো প্রতিভাবান লেখক খুব কমই দেখা যায়। তার লেখার যে শক্তি, তার চরিত্র চিত্রায়ন, সমাজ বাস্তবতা তুলে ধরা, অনেকগুলো অনুভূতিকে ক্রমান্বয়ে খেলিয়ে যাওয়ার যে শক্তি তাকে অতুলনীয় করে তুলেছে। যে কারণে তিনি সবার কাছে অসম্ভব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। কেবল একজন লেখক নন, তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। আর যেখানেই তিনি হাত দিয়েছেন, সোনা ফলিয়েছেন।
মেহের আফরোজ শাওন বলেন, নিউইয়র্ক তার কাছে মিশ্র অনুভূতির নাম। এই শহর যেমন তাকে দিয়েছে অনেক, তেমনি কেড়ে নিয়েছে তার ভালোবাসাকে। তিনি বলেন, নিউইয়র্কের সঙ্গে আমার অভিমানের সম্পর্ক। এই শহর থেকেই চলে যান হুমায়ুন আহমেদ। তাই তাকে নিয়ে এমন আয়োজনে যুক্ত থাকতে পারাটাই আমার জন্য বড় পাওয়া।
মাজহারুল ইসলাম বলেন, বাংলা ভাষার বইয়ের পাঠক সৃষ্টির ক্ষেত্রে হুমায়ুন আহমেদের অবদান অসামান্য। বিশেষ করে একুশের বইমেলা হুমায়ুন আহমেদ একাই জমিয়ে রাখতেন। তার কাজকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য এ ধরণের উদ্যোগ পৃথিবীর দেশে দেশে নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন রথীন্দ্রনাথ রায়, শহীদ হাসান, মেহের আফরোজ শাওন, কামরুজ্জামান বকুল, শাহ মাহবুব, কৃষ্ণা তিথি, মরিয়ম মারিয়াসহ নিউইয়র্কের জনপ্রিয় শিল্পীরা।
অনুষ্ঠানে ছিল কবিতা পাঠ, কাব্য জলসাসহ নানা আয়োজন। সম্মেলন উপলক্ষ্যে ছিল হুমায়ুন আহমেদের বই ও অন্যান্য সামগ্রীর মেলা। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এই আয়োজন করা হবে।
একাত্তর/এআর
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.