অস্কারজয়ী প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অভিনয়শিল্পী সিডনি পটিয়ার আর নেই। বাহামার প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ ডেভিসের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) ৯৪ বছর বয়সে এই অভিনয়শিল্পীর মৃত্যুর খবর জানানো হয়।
ফিলিপ ডেভিস তার সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, “অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে আমি আজ সকালে স্যার সিডনি পটিয়ারের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তবে আমরা তার মৃত্যুতে শোক পালন করার পাশপাশি একজন মহান বাহামিয়ানের জীবন উদযাপনও করছি।”
“স্যার সিডনি পটিয়ার ছিলেন একজন সাংস্কৃতিক আইকন, একজন অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, নাগরিক ও মানবাধিকার কর্মী, এবং পরবর্তী সময়ে তিনি একজন কূটনীতিক হয়েছিলেন ।”
বাহামার নাগরিক সিডনি পটিয়ার ১৯৬৩ সালে ‘লিলিস অব দ্য ফিল্ড’ সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করে সেরা অভিনেতা হিসেবে প্রথম কোনো কৃষ্ণাঙ্গ হয়ে অস্কার পুরস্কার জেতেন।
হলিউডে বর্ণবাদের মূলোৎপাটনে জীবদ্দশায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, অস্কার বিজয়ী ভিওলা ডেভিস, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব অপরাহ উইনফ্রেসহ অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তিত্ব তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: চীনের কিংহাইয়ে ৬ দশমিক ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
এর আগে, ২০০৯ সালে ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালে পটিয়ারকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৪ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদেও দায়িত্ব পালন করেন কিংবদন্তি এই অভিনেতা।
১৯২৭ সালে আমেরিকার মিয়ামিতে একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সিডনি পটিয়ার। তবে তিনি ছেলেবেলা কাটান বাহামা দ্বীপপুঞ্জে।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি নিউ ইয়র্কে পাড়ি জমান তিনি। তবে তার আগে সেনাবাহিনীতে একটি কাজ নেওয়ার জন্য তাকে বয়স সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য প্রদান করতে হয়েছিল।
অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে হোটেলে থালাবাসন ধোয়াসহ তাকে নানা ধরনের কাজ করতে হয়েছিল।
১৯৪৮ সালে পটিয়ার অভিনীত ‘অ্যানা লুকাস্টা’ ব্রডওয়েতে সাফল্য অর্জনের দুই বছর পর রিচার্ড উইডমার্কের সঙ্গে ‘নো ওয়ে আউট” চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
১৯৭৪ সালে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ পটিয়ারকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করে। এছাড়া জাপান এবং জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কোতে বাহামিয়ান রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
একাত্তর/টিএ
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.