ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে পাবনা সাঁথিয়া উপজেলার বেসরকারি রুবিয়া-ফয়েজ ডায়াবেটিক ও জেনারেল হাসপাতালের বিরুদ্ধে। গাইনি চিকিৎসক না হয়েও ক্লিনিকটির পরিচালক ডা. মো. আব্দুর রহিম খান নিজে ওই প্রসূতি মায়ের অস্ত্রোপচার করেন।
ফলে ভুল অপারেশনের কারণে মৃত্যু হয় মায়ের আর আশঙ্কাজনক অবস্থা রয়েছে সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুটি। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (১৩ মে) মৃত্যু হয় শ্যামলী খাতুন (২৩) নামে ওই নারীর। তিনি উপজেলার তেতুলতলা স্বরূপ গ্রামের দিনমজুর খাইরুল ইসলামের স্ত্রী।
প্রসব বেদনা নিয়ে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে উপজেলার একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি হন তিনি। সেই রাতেই স্থানীয় দালাল চক্র তার পরিবারকে ফুসলিয়ে পার্শ্ববর্তী রুবিয়া-ফয়েজ ডায়াবেটিক ও জেনারেল হাসপাতালে তাকে ভর্তি করান।
শুক্রবার সকালে ক্লিনিকের মালিক ডা. মো. আব্দুল রহিম খান নিজেই ওই প্রসূতির অস্ত্রোপচার করেন। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের সময় কোন গাইনি চিকিৎসক এমনকি অ্যানেস্থেসিয়ান উপস্থিত ছিল না।
ভুল অস্ত্রোপচারের কারণে অধিক রক্তক্ষরণে অপারেশন থিয়েটারের টেবিলেই শ্যামলীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন তারা। এছাড়াও নবজাতক শিশুর দেহের বিভিন্ন স্থানে ছুরির আঘাত রয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
এদিকে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ধামাচাপা দিতে রোগীর স্বজনদের ডেকে ভয়ভীতি দেখানোর পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্স ডেকে রোগীর মৃতদেহ বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা।
ক্লিনিকটির বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা দিয়ে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ এবারই প্রথম নয়। এর আগেও ভুল চিকিৎসা দিয়ে বেশ কিছু রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর।
তবে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. মো. আব্দুর রহিম খানের দাবি, সব নিয়ম মেনেই ওই প্রসূতিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। অপারেশনের সময় সেখানে গাইনি চিকিৎসক ডা. মাহফুজা আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। এদিকে পরিচালকের এই দাবিকে মিথ্যা বলেছেন ক্লিনিকটির গেস্ট ডাক্তার রুবিয়া ফয়েজ।
আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুরের কথা বলে চট্টগ্রামের বিমানে তুলে টাকা নিয়ে হাওয়া
সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম জামাল আহম্মেদ জানান, অতীতে এই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা দিয়ে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ইউএনও আরও জানান, অস্ত্রোপচারের সময় কোন গাইনি ডাক্তার উপস্থিত ছিলোনা। পরিচালক নিজের দোষ গোপন করার জন্য অন্যের উপরে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি।
এদিকে এই ঘটনায় এখনো থানায় কোন লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসিফ মো. সিদ্দিকুল ইসলাম।
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.