বাংলাদেশি এক বধূর ওপার বাংলা জয়ের গল্প নতুন কিছু নয়। রন্ধনশিল্পী নয়না আফরোজের বাংলাদেশি খাবার নিয়ে কলকাতা জয়ের ইতিহাস এরিমধ্যে কয়েক বছর পুরনো হয়ে গেছে।
শুধু কলকাতা নয়, ভারতের রাজধানী দিল্লিবাসীকেও রসনায় তৃপ্ত করেছেন এই রন্ধনশিল্পী। বাংলাদেশের সব ঐতিহ্যবাহী খাবারকে ভারতে পরিচয় করিয়ে দেয়ায় লক্ষ্য নয়নার।
কিন্তু তার সেই ইচ্ছা ও পরিকল্পনাকে একেবারে ঘরবন্দী করে দেয় করোনাকাল। অবশেষে মহামারী কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতেই কাজে নেমে পড়েন তিনি।
২০১৯ সালে জুলাইতে কলকাতায়, বাংলাদেশের পনেরটি জেলার ঐতিহ্যবাহী সব খাবার নিয়ে ‘পদ্মাপারের পাকঘর’ আয়োজন করে সাড়া ফেলে দেয়া নয়না আফরোজ এবারের পূজায় একই শহরে আয়োজন করলেন আরও একটি খাদ্য উৎসবের।
খাদ্যরসিক হিসাবে দুই বাংলার মানুষের রয়েছে বিশেষ খ্যাতি। তাই বাংলাদেশের নানা পদের ব্যঞ্জনা পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা ভারতেই ছড়িয়ে দিতে চান নয়না আফরোজ।
সেই ধারায় কলকাতার মানুষকে বাংলাদেশি রসনায় তৃপ্ত করছেন এবারের পূজায়। সেখানের এক নামকরা হোটেলে খোলা হয়েছে ‘পূজা বুফে’।
সাউথ কলকাতার পাঁচ তারকা হোটেল দ্য ক্ল্যারিডেলের সেই বুফেতে রয়েছে মোট ৮০ রকমের খাবার। তার মধ্যে বাংলাদেশি খাবারের সংখ্যাই ৫২টি।
আরও পড়ুন: চাইলেও ডুবতে পারবেন না যে সাগরের জলে
পূজা বুফের দায়িত্বে রয়েছেন রন্ধনশিল্পী নয়না আফরোজ। তিনি বলেন, এবারের খাবারগুলো বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের, যার মধ্যে রয়েছে চুইঝাল মাটন, কক্সবাজারের রূপচাঁদা ফিস কারি, মুরগী বিরিয়ানি ইত্যাদি।
এছাড়াও ডেসার্টের মধ্যে রয়েছে বুটের ডালের হালুয়া, দুধ কদু। পাশাপাশি রয়েছে ডিম জর্দা , বিক্রমপুরের বেগুন খাসি, ঝিঙের কোরমাও।
অর্থাৎ, মহানগরবাসী সাধারণত যেসব খাবারের সঙ্গে একেবারেই পরিচিত নন বা খুব সামান্যই জানেন সেসব রকমারি খাবারই রয়েছে পূজা বুফেতে।
নয়না জানান, পূজার দিনগুলোতে কলকাতাবাসী যেন শহরে বসেই বাংলাদেশি খাবারের পূর্ণ স্বাদ পেতে পারেন, সেকথা মাথায় রেখেই খুব বাছাই করা খাবার রাখা হয়েছে এবার।
এছাড়াও যারা প্রবাসী বাংলাদেশী রয়েছেন তারা যদি দেশের খাবার মিস করেন, তাহলে সেই আয়োজনে গিয়ে আক্ষেপ মিটিয়ে নিতে পারবেন তারাও।
তিনি আরও বলেন, কলকাতায় বসে পারফেক্ট ভর্তা খাওয়া হয়ে ওঠে না। তাই কলকাতায় বসেই বাংলাদেশি খাবারের স্বাদ যারা পেতে চাইছেন এবং ঘরের খাবার যারা মিস করছেন তাদের জন্য এটাই সুবর্ণ সুযোগ। এখানে ৯ রকমের ভর্তা আছে।
১০ অক্টোবর পূজা বুফের শুভ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান। ১৫ অক্টোবর দুপুর পর্যন্ত খোলা থাকবে সেই বুফে।
আরও পড়ুন: কাজ কম বেশি হলেও খরচ হবে সমান ক্যালোরি?
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে আগস্টে পশ্চিমবাংলার ভোজন রসিকদের কাছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় সব ভর্তার পরিচয় করিয়ে দিয়ে আয়োজন করা হয় ‘ভর্তাকাহন’।
কলকাতার গলফগ্রিন উদয় সদনে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নানা পদের ভর্তা নিয়ে উৎসবের কিউরেটর ছিলেন রন্ধনশিল্পী পৃথা সেন। বাংলাদেশ থেকে উৎসবে অংশ নেন নয়না আফরোজ।
একাত্তর/এসজে
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.