গেলো পাঁচ মাসের মধ্যে আবারও করোনা শনাক্তের সর্বোচ্চ হার। করোনার আগের দুই ঢেউয়ের সময়েও সংক্রমনের এমন আগ্রাসী রূপ দেখা যায়নি।
এই উর্ধ্বগতির কারণ হিসেবে এখনও করোনার ডেল্টা ধরণকেই দায়ী করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, মানুষকে সুরক্ষা দিতে টিকার কার্যক্রম আরও গতিশীল করা হয়েছে।
করোনাকালে সবচেয়ে ভয়াবহ ধাক্কাটা ছিলো গেলো বছর। যা ছিলো করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। সেই সময় দৈনিক পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার তিন শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে পৌঁছুতে সময় লাগে এক মাসেরও বেশি। কিন্তু তৃতীয় ঢেউয়ের এই সময়ে শনাক্তের হার তিন থেকে একুশ শতাংশে পৌঁছাতে সময় নিলো মাত্র ১৭ দিন।
গেলো ২৪ ঘন্টায় রোগীর সংখ্যা আরো বেড়েছে। সোমবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে সাড়ে ছয় হাজারেরও বেশী। যা গেলো ১৮ আগস্টের পর সর্বোচ্চ।
মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে ধীরে ধীরে। এদিন মারা গেছে ১০ জন। দৈনিক শনাক্তের হার পৌঁছেছে ২০.৮৮ শতাংশে। এটিও গেলো পাঁচ মাসে শনাক্তের সর্বোচ্চ হার।
দেশে করোনার নতুন অতি সংক্রামকধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়ছে। কিন্তু করোনার এই উর্ধ্বগতির কারণ হিসেবে এখনও ডেল্টা ধরনকেই দায়ী করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সোমবার বিকালে এক ভার্চুয়ালপ্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলমবলেন, ওমিক্রন বাড়ছে, তবে সেটাডেল্টার মতো না। ঢাকায় ওমিক্রনের হার বেশি। তবে সামগ্রিকভাবে ডেল্টার প্রাধান্য বেশি।অন্যান্য শহরে ওমিক্রন নেই। এখানে যেটা বাড়ছে সেটা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। এইভ্যারিয়েন্টের পরিণতি আপনারা আগেই দেখেছেন।
তিনি আরো বলেন, অনেকে ভাবছেওমিক্রনে ভয়ের কারণ নেই। কারণ, এখানেমৃত্যুর হার কম। আমাদের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং আইইডিসিআর জিনোম সিকোয়েন্স করছে।তারা বলছেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের হার বেশি।
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেঅতিরিক্ত মহাপরিচালক (কল্যাণ) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘যেসব সেক্টরে জনসমাগমের আশঙ্কা থাকে কিংবা মানুষেরসংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা থাকে তারা যেন দ্রুত টিকা নিয়ে নেন’।
তিনি আরো বলেন, ‘শিক্ষার্থীদেরটিকার আওতায় আনা শেষ হওয়ার পর যাদের অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছি, যেমন- কলকারখানা, পরিবহন খাতের শ্রমিক, হোটেলরেস্তোরাঁর কর্মচারিদের পর্যায়ক্রমে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছি।
সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, দেশের১৮ বছর বয়সীরা যে কেউ কিন্তু নিবন্ধন করে টিকা নিতে পারছে। এনআইডি বা জন্মসনদেরকারণে যাতে নিবন্ধনে বাধা না হয়, সেজন্য ইতোমধ্যে টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে কাগজেতথ্য লিপিবদ্ধ করার মাধ্যমে টিকাদানের সুযোগ রাখা হয়েছে।
এদিকে, সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা থেকে সুরক্ষা দিতে বুস্টার ডোজের বয়স সীমা কমিয়ে ৫০ বছর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বয়সসীমা কমিয়ে ৫০বছর করা হয়েছে। যেসব ফ্রন্টলাইনার ছিলেন তাদের জন্য বয়স কোনও বাধা ছিল না।জনসাধারণের জন্য সেটা কমিয়ে ৫০ বা তদূর্ধ্ব করা হয়েছে।
দেশে এখন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় তেতাল্লিশ হাজার। এই সংখ্যা যতো বাড়বে হাসপাতালে শয্যা খালি পাওয়া নিয়ে হাহাকারের শঙ্কাও ততোই বাড়বে।
একাত্তর/টিএ
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.