বাংলাদেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার কোটি
টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের পর ভারতে পালিয়েও রেহাই পেলেন না বহুল আলোচিত পিকে হালদার ওরফে
প্রশান্ত কুমার হালদার।
পশ্চিম বঙ্গের বর্ধমান জেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে
ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রনালয়ের তদন্তকারি সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট-ইডি।
শিবশঙ্কর হালদার নামের ছদ্ম পরিচয়ে তিনি বর্ধমানের কাটোয়া
এলাকায়
পালিয়ে ছিলেন। একই
অভিযানে আটক হয়েছে তার বড় ভাই প্রাণেশ হালদারও।
বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানসহ দশটি এলাকায় অভিযান শুরু করে ভারতের কেন্দ্রীয়
অর্থমন্ত্রনালয়ের তদন্তকারি সংস্থা-ইডি।
শুক্রবারের অভিযানে আটক হন পিকে হালদারের ক্যাশিয়ার হিসাবে পরিচিত সুকুমার মৃধার মেয়ে অতশী। সুকুমার মৃধা এরিমধ্যে বাংলাদেশের কারাগারে আটক রয়েছেন।
অতশীর ফোনে তল্লাশি চালিয়ে শিব শঙ্কর
হালদারের ফোন নম্বর পান ভারতীয় গোয়েন্দারা। তাদের কাছে তথ্য ছিলো এই শিব শঙ্করই মূলত পিকে হালদার।
যিনি জালিয়াতি করে ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, রেশন কার্ড ও আঁধার কার্ড নিয়েছেন। আর এভাবেই মেলে দেশের হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের
হোতা পিকে হালদারের সন্ধান।
তার সাথে আরও আটক হয়েছেন পিকে হালদারের বড় ভাই প্রাণেশ
কুমার হালদার, ছোট ভাই প্রিতীশ কুমার হালদার।
এছাড়াও আটক হয়েছে স্বপন ও উত্তম মৈত্র নামের আরও দুই ভাই। এর আগে স্বপনের সঙ্গে
সাথে পিকের টাকা পাচারের যোগসূত্র পায় বাংলাদেশে ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স।
পিকে হালদারের অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত কমপক্ষে ৭০ জনের একটি তালিকা করেছিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই ইউনিট এবং দুর্নীতি দমন সংস্থা- ও দুদক।
যাদের অনেকেই ছদ্ম পরিচয়ে ভারতে অবস্থান করছিলো। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় তারা নামে বেনামে প্রচুর সম্পদের মালিক হয়েছেন।
তাদের সন্ধানেই শুক্রবার দিনভর বর্ধমানসহ ১০টি এলাকায় অভিযানে নামে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রনালয়ের তদন্তকারি সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট।
আর এই অভিযানেই নিশ্চিত হওয়া যায় শিব শঙ্কর হালদার ওরফে পিকে হালদারের অবস্থান। জানা গেছে ২০১৯ সালে কানাডায় পালিয়ে গিয়েও নিয়মিত ভারতে যাতায়াত করতেন পিকে।
আরও পড়ুন: পিকের পাচার করা অর্থ উদ্ধারে দ্রুত উদ্যেগ নেয়ার তাগাদা
স্থায়ীভাবে সেখানে আত্মগোপনের জন্যই জালিয়াতি করে তিনি
ভারতীয় নাগরিকত্ব নেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। ভারতীয়
গণমাধ্যম বলছে পিকে হালদার তার সহযোগীদের দিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে অন্তত ৩০০ কোটি
টাকা পাচার করেছে।
এই টাকায় বর্ধমান, চব্বিশ পরগনা ও কলকাতার বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় বিলাসবহুল বাড়ি ও বিপুল পরিমান সম্পত্তি কিনেছেন। নামে বেনামে খুলেছেন একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যা নিয়ে তদন্ত করছে ভারতের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা।
একাত্তর/আরবিএস
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.