ভারতে আইনি প্রক্রিয়া শেষ হবার পরই পিকে হালদারকে দেশে ফেরানো যাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব। তাকে ফিরিয়ে আনতে এরিমধ্যে ভারতের কাছে আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র সচিবের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে, ভারতীয় হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে পিকে হালদারকে।
বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার, ভুয়া পরিচয়ে ভারতের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট গ্রহণসহ নানা অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডে পিকে হালদারকে রিমান্ডের অনুমোদন দিয়েছে ভারতের আদালত। পিকের বিরুদ্ধে দেশটিতে শুরু হওয়া এই আইনি প্রক্রিয়া শেষ হতে লাগতে পারে দীর্ঘ সময়।
পিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি ভারত এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে জানায়নি। তবে পররাষ্ট্র সচিবের সাথে ভারতীয় হাইকমিশনের সাক্ষাৎ শেষে সচিব জানান তাকে ফেরত চেয়েছে ঢাকা।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এটি একটি আর্থিক দুর্নীতির মামলা। এটি সাধারণ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে ভিন্ন। ভারতের আইনের আলোকে তারা প্রথমে প্রক্রিয়াটি শেষ করবে। তারপরে আমাদের যে অনুরোধগুলো আছে সেগুলো বিবেচনায় নেবে।
নির্দিষ্টভাবে কী অনুরোধ করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সহযোগিতা চেয়েছি। এখন সহযোগিতা করার অর্থ হচ্ছে পি কে হালদার দেশে ফেরত আনা প্রয়োজন। সেটাই আমরা বলেছি। তাদের একটি আইনি প্রক্রিয়া আছে, সেটি অনুসরণ করা হবে। তারা বলেছে, তাদের আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলে তারা আমাদের সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবে।
ভারতের বিচার কাজ শেষ হওয়ার পরে তাকে ফেরত দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এটি এখনই বলা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে অনুরোধ করা হবে। এক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তিনি বলেন, ভারতে যদি কোনও অপরাধ হয়ে থাকে সেটির বিচার কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব তাদের। কিন্তু পি কে হালদারের বিষয়টি অনুসন্ধানের পর্যায় রয়েছে। পুরো তদন্ত শেষ হওয়ার পরে কোনও আইনি কাঠামোতে বা বিকল্প ভাবে দুদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলে সব সময় যে আইনি কাঠামোর প্রয়োজন হয় বিষয়টি সে রকম নয়। এর আগে আমরা দেখেছি এ রকমভাবে তাদের আমরা বিভিন্ন সহযোগিতা করেছি। তারাও আমাদের সহযোগিতা করেছে।
পি কে হালদারকে ফেরত দেওয়া প্রসঙ্গে সচিব বলেন, তাকে ফেরত না দেওয়ার কোনও কারণ নেই। এখানে বন্দি বিনিময় হবে কী না বা হালদার বন্দি অবস্থায় আছে কী না এগুলা আইনি প্রশ্ন। এগুলোর উত্তর দেওয়ার যোগ্যতা আমার নেই। কিন্তু আমি মনে করি তারা তাদের প্রক্রিয়া শেষ করে তাকে ফেরত দেবে। বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ হচ্ছে।
প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী জানিয়েছেন, বাংলাদেশের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার হয় পিকে হালদার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ভারতের সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে তথ্য দিয়েছে। ভারতীয় সংস্থা ওই তথ্য যাচাইয়ের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। এক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও অপরাধীদের দমনের জন্য সহযোগিতা রয়েছে।
পিকে হালদারকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ অনুরোধ করেছে কি না- জানতে চাইলে ভারতের হাইকমিশনার বলেন, গত সপ্তাহে ছুটির দিনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের কাছে যা তথ্য আছে, তার ভিত্তিতে একটা সময় বাংলাদেশকে জানানো হবে।
আরও পড়ুন: পি কে হালদারকে আরও ১০ দিনের রিমান্ডে পেলো ইডি
দোরাইস্বামী বলেন, এটি একটি আইনি বিষয়। বুঝতে হবে, এটি কিন্তু বড়দিনের কার্ড বিনিময় নয়। আমি মনে করি, এ ধরনের বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। সেটি আস্তে আস্তে হতে দিন। এ নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছি।
একাত্তর/এসি
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.