দেশে দেশে চলমান খাদ্য সংকট কাটাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য রপ্তানিতে আকস্মিক নিষেধাজ্ঞা বন্ধের আহবান জানিয়েছে বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলো।
একই সাথে করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কা কাটাতে বিশ্ব বাণিজ্যে ছাড়ের পাশাপাশি নীতিগত সহায়তাও প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তারা।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দ্বাদশ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের এ যাত্রায় সদস্যভুক্ত দেশগুলোর সহযোগিতা জরুরি।
বাণিজ্য উদারীকরণ এবং দরিদ্র দেশগুলোর সেখানে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয়েছিলো বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দ্বাদশ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক।
দ্বিতীয় দিনে পুরোটা সময় আলোচনা চললো সদস্য দেশগুলোর করোনা পরবর্তী জীবন-জীবিকা যুদ্ধে টিকে থাকা চ্যালেঞ্জ।
অন্যদিকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তা ও সংকট তৈরি হতে পারে এমন শঙ্কা নিয়ে।
দিনভর দফায় দফায় বৈঠক করেও ঐকমতে পৌঁছাতে পারেনি উন্নত দেশগুলো। ফলে, চরম বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে নিরাশ হয়েছে স্বল্পোন্নত বেশিরভাগ দেশ।
দাবি দাওয়া ছিলো, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্যের উপর হঠাৎ করে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ ঠিক হবে না।
রপ্তানি বন্ধ করতে হলে আমদানিকারক দেশকে অব্যশই নির্দিষ্ট একটা সময়ের আগে তা জানানোর তাগিদ দেয়া হয়।
দেশের ভেতরে প্রতি বছর জনসংখ্যা বাড়ছে, খাদ্য পণ্যের মজুদ ও দাম নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছে বাংলাদেশ। বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, অবস্থার উত্তরণে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এক হয়ে লড়তে হবে।
সেই সঙ্গে বাংলাদেশসহ এলডিসিভুক্ত দেশের জন্য শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা আরও কয়েক বছর অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন টিপু মুনশী।
তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হবার পর বাংলাদেশসহ অন্যান্য এলডিসিভুক্ত দেশ শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাচ্ছে, সেটা আরও কয়েক বছর অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। তাই মানুষের বেঁচে থাকার জন্য বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্যের ওপর হঠাৎ করে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ ঠিক হবে না। আরও বলেন, রপ্তানি বন্ধ হলে আমদানিকারক দেশকে নির্দিষ্ট একটা সময়ের আগে তা জানাতে হবে।
টিপু মুনশী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি হ্রাসে এলডিসিভুক্ত দেশকে সরকারি পর্যায়ে বড় আকারে খাদ্য মজুত করার মত সুযোগ রাখা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: দোনেৎস্কে ‘ইউক্রেইনীয় গোলায়’ নিহত পাঁচ, আহত ৩৩
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে সমৃদ্ধির স্বীকৃতি মিললেও চ্যালেঞ্জ অনেক আর তাই তো ডব্লিউটিওকে পাশে চায় বাংলাদেশ।
সম্মেলনে আসা বিশ্লেষকরাও জানান, বিশ্ব বাণিজ্য নিজেদের সুবিধা বজায় রাখতে ডব্লিউটিওতে স্বাভাবিক দর-কষাকষির পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রচেষ্টাও চালিয়ে যেতে হবে বাংলাদেশকে।
একাত্তর/এসি
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.