বন্যায় বিপর্যস্ত হচ্ছে দেশের উত্তর-পূর্ব এবং মধ্যাঞ্চল। এরই মধ্যে শেরপুর, জামালপুর, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণার বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন শিশু এবং বয়স্করা।
শনিবার (১৮ জুন) পানির স্রোতে মুহূর্তেই নদী গর্ভে চলে যায় শেরপুর নালিতাবাড়ী উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের চেল্লাখালী নদীর ওপর নির্মিত ব্রেইলি ব্রিজ। পুরো এলাকা তলিয়েছে পানির নিচে।
মহারশি, সোমেশ্বরী, চেল্লাখালী ও ভোগাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়েছে সদর, ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীর ১৩টি ইউনিয়ন।
ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার সীমান্তবর্তী এই তিন উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানিবন্দী শতাধিক গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।
তবে পাহাড়ি নদীর পানি কমায় উজানের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে পশু, শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে প্লাবিত এলাকার মানুষ।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের সহায়তায় ৬০ মেট্রিক টন চাল, তিন লাখ নগদ টাকা ও এক হাজার পাঁচশত প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বগুড়ায় বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনার পানি। এরই মধ্যে নদী তীরে নিচু এলাকা এবং চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি মানুষ বলছেন, তাদের ভাগ্যে জুটছে না খাবার।
কুড়িগ্রামে ধরলা, ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া দুধকুমারসহ ১৪টি নদ–নদীর পানি বিপৎসীমার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ৯ উপজেলার পানিবন্দি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন নৌকা ও বাঁশের মাচানে।
আরও পড়ুন: দুর্গত এলাকার কোটি মানুষকে নেয়া হয়েছে নিরাপদ স্থানে
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দুর্ভোগে আছেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ, তাড়াইল, নিকলী, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও বাজিতপুরের মানুষ। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মানুষ ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রের খোঁজে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে জামালপুরে যমুনার পানি বেড়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন শিশু এবং বয়স্করা।
নেত্রকোণার ছয় উপজেলায় ১৬ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিলেও প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ এখনো পানিবন্দি। নৌকা না থাকায় বড় হাঁড়িতে খাবারের খোঁজে নেমেছে শিশুরা।
বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের পাঁচটি উপজেলার নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বেড়েই চলেছে কালনী ও কুশিয়ারা নদীর পানি।
একাত্তর/আরএ
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.