সাভারের আশুলিয়ায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের হত্যাকারী জিতু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবিতে বুধবারও মহাসড়কে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা।
দুপুরে ইপিজেড-আশুলিয়া-টঙ্গী সড়কে বিক্ষোভ করে হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং স্থানীয় অন্যান্য স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় জিতুকে গ্রেপ্তারে ২৪ ঘন্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে শিক্ষার্থীর জানিয়েছেন, জিতু গ্রেপ্তার না হলে বৃহস্পতিবার সাভার উপজেলা পরিষদ মাঠে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মহাসমাবেশ হবে।
মানববন্ধন থেকে নিহত ওই শিক্ষকের সহকর্মীসহ শিক্ষার্থীরা দ্রুত ঘাতক ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতুকে গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।
শিক্ষার্থীরা কিশোর গ্যাংমুক্ত এলাকার দাবিসহ মোট ৬ দফা দাবি করেন। তাদের দাবি বাস্তবায়িত না হলে আগামীতে আরো কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন তারা।
মানববন্ধন থেকে শিক্ষকরা নিজেদের নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে ধরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। স্কুলের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন পরিবারের প্রশ্রয়েই বেপরোয়া হয়েছে জিতু।
শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা জানান, কিশোর গ্যাং লিডার জিতুর আচরণ ছিলো বেপরোয়া। সে স্কুলে বেঞ্চে একাই বসতো। মাঝে মাঝে নেশাগ্রস্থের মতো আচরণও করতো।
নানা স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং চাচা পরিচালক হওয়ায় সবার সঙ্গে উদ্ধত আচরণ করতো জিতু। জিতুর বেপরোয়া আচরণ সম্পর্কে অভিভাবককে জানিয়ে কোন লাভ হয়নি।
অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, উৎপল স্যার অনেকবার জিতুকে আমার কাছে এনেছেন। আমরা তাকে সংশোধন হতে বুঝিয়েছি। অভিভাবককেও বলেছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জিতুর নানা হযরত আলী ও চাচা মারুফ হাসান সুমন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার এসআই এমদাদুল হক জানান, অভিযান অব্যাহত রয়েছে, শিগগিরই ধরা পড়বে জিতু।
এদিকে, সাভারের আশুলিয়ায় শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী।
বুধবার (২৯ জু) বেলা সোয়া তিনটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে পাঁচ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেছেন।
অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষক উৎপল কুমারের হত্যাকারী গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত তারা আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার হাজী ইউনুছ আলী স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্র ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে শিক্ষক উৎপল কুমারকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। সোমবার হাসপাতালে তিনি মারা যান।
উৎপল কুমার হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুলছাত্রের বাবাকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে অভিযুক্ত স্কুলছাত্র এখনো পলাতক। তবে উৎপল কুমার হত্যায় জড়িত ছাত্রকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
একাত্তর/এআর
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.