করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ থেকে রক্ষা পেতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সুষম খাদ্য গ্রহন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এরিমধ্যে যারা করোনাতে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের জন্য সঠিক পথ্য ও খাবার খুবই জরুরি। করোনা সংক্রমণের কারণে রোগীর যেসব কোষ ও অন্ত্রের ক্ষতি হয়, তা সঠিক খাবারের মাধ্যমে সারিয়ে নেয়া প্রয়োজন।
আর তাই করোনা থেকে সেরা উঠা রোগীদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুয়ায়ী বিভিন্ন ধরনের ঔষুধ ও ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট প্রয়োজন অনুযায়ী গ্রহনের পাশাপাশি একজন পুষ্টিবিদের তত্বাবধানে সঠিক ডায়েট বা সুষম খাবার গ্রহণের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে প্রোটিন, ক্যালরি, ভিটামিনস, মিনারেলস সঠিক পরিমাণে যারা গ্রহণ করেন তাদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর শরীরের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে শরীরকে সুস্থ করে তোলে।
করোনা পরবর্তী এই সময়ে প্রোটিনের চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পায় যা স্বাভাবিক সময়ের চাহিদার তুলনায় প্রায় দ্বিগুন। বিশ্বের বিভিন্ন স্বাস্থ্য নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, করোনা পরবর্তী এই সময়ে প্রোটিনের চাহিদা হিসেব করা হয় প্রতি কেজি বডি ওজনের জন্য প্রায় ১.৫ গ্রাম থেকে ২ গ্রাম যা স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে প্রতি কেজি ওজন অনুযায়ি ১ গ্রাম।
তাই সঠিকভাবে শরীরে পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করা না হলে এবং শরীরের ইমিউনিটি যতটুকু কমে যায় তা না বাড়াতে পারলে শরীর স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি দুর্বল হয়ে যায় এবং সেলগুলোর ক্ষতিও পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হয় না।
তাই করোনা থেকে সেরে ওঠার পরও সবচেয়ে বেশি খাদ্যের দিকে নজর দেয়া উচিত। তবে ক্রনিক কিডনি রোগ যাদের রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে প্রোটিনের পরিমাণ না বাড়িয়ে শরীরের বাড়তি চাহিদা পুরন করার জন্য কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার থেকে বাড়তি ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে।
করোনা পরবর্তী এই সময়ে ওজন কমে যাওয়া, পরবর্তীতে আবার ওজন বেড়ে যাওয়া, চুল পরা, ত্বকের সমস্যা, ক্লান্তি, শরীর ব্যথা, খিটকিটে মেজাজ এই সমস্যা গুলো খুব বেশি দেখা যায়।
তাই এই সময় সঠিক পুষ্টিই পারে এই সমস্যার তীব্রতা কমাতে। এই সময়ে চেষ্টা করতে হবে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা অর্থাৎ রঙিন শাকসবজি, ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল খাওয়া, ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি এসিড সম্দৃদ্ধ খাবার গ্রহন করা।
এই সময় টাতে প্রোবায়োটিক জাতীয় খাবার যেমন দই খাওয়া উচিৎ। যা সহজেই খাবার হজম করতে সাহায্য করবে। করোনা পরবর্তী সময়ে সুষম খাবার গ্রহনের পাশাপাশি আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রোগীকে আরো সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
সেটি হলো মানসিকভাবে সুস্থ থাকা, সুশৃঙ্খল জীবনযাপন, পরিমিত ঘুম, প্রতিদিন নিয়ম করে ভিটামিন-ডি পেতে নির্দিষ্ট সময় রোদ লাগানো, পরিবারের সাথে কোয়ালিটি সময় কাটানো, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ফুসফুসের ব্যায়াম করা এবং নিয়ম নেনে ওষুধ গ্রহণ করা।
একাত্তর/ এইচআরজি
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.