দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনির উৎপাদন, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছয় বছরের জন্য আবারও বর্তমান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘জিটিসি’কে দেওয়া হয়েছে।
নতুন চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ছয় বছরে প্রায় এক হাজার ২৮০ কোটি টাকার বিনিময়ে ৮৮ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিকটন পাথর উত্তোলন করবে। এতে প্রতি মেট্রিকটন পাথর উত্তোলন করতে খরচ পড়বে প্রায় এক হাজার ৪৪৫ টাকা।
জানা গেছে, ২০০৭ সালের ২৫ মে মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায়। উৎপাদন শুরুর পর থেকে নানা প্রতিকুলতার কারণে পেট্রোবাংলা প্রতিদিন তিন শিফটে ৫ হাজার মেট্রিকটন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এক শিফটে গড়ে এক হাজার মেট্রিকটন পাথর উত্তোলন করে আসছিল। এরফলে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত ৬ বছরে খনিটি লোকসান দিয়েছে প্রায় শত কোটি টাকা।
এ অবস্থায় ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী ছয় বছরের জন্য খনির উৎপাদন ও রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় বেলারুশের জেএসসি ট্রেস্ট সকটোস্ট্রয় ও দেশীয় একমাত্র মাইনিং কাজে অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া করপোরেশন লিমিটেড নিয়ে গঠিত জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়ামকে (জিটিসি)। জিটিসি পূর্ণমাত্রায় পাথর উৎপাদন করায় পর পর টানা তিন অর্থবছর প্রায় ৫০ কোটি টাকা মুনাফা করে খনিটি।
আরও পড়ুন: করোনার দেড় বছরে বাগেরহাটে ৩,১৭৮ বাল্যবিবাহ
জিটিসির প্রথমদফা চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় গত ২ সেপ্টেম্বর। নিয়ম অনুযায়ী চুক্তি শেষ হওয়ার কমপক্ষে ছয় মাস আগে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়ার কথা। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে ৭ দফা আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেও বিদেশিদের তেমন সাড়া মেলেনি।
এ অবস্থায় খনির পাথর উৎপাদন অব্যাহত রাখার স্বার্থে এবং জিটিসি’র কর্মদক্ষতা বিবেচনায় নিয়ে গত মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় দফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে চুক্তি কার্যকর করা হয় গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে।
মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু দাউদ মো. ফরিদুজ্জামান চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পেট্রোবাংলা, জ্বালানী মন্ত্রণালয়সহ সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সহযোগিতায় নতুন চুক্তি করতে পারায় খনি শ্রমিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সন্তষ্ট। সকলের সহযোগিতা থাকলে বর্তমান লক্ষ্যমাত্রা ৮৮ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিকটন পাথর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তোলন করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
একাত্তর/আরএইচ