বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমায় ফানুস উৎসবে মেতেছেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়। বুধবার সন্ধার পর থেকে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ২৪টি রাখাইন বৌদ্ধ বিহার ও পাড়া থেকে নানা রঙের ফানুস ও বেলুন উড়িয়ে এই উৎসব উদযাপন করেছেন তারা। কয়েকশ ফানুস উড়িয়ে রাতের আকাশ আলোকিত করা হয় প্রতিটি পাড়া থেকে। আর এ উৎসব দেখতে ভীড় করে বিভিন্ন ধর্মের শতশত নারী-পুরুষ।
সবচেয়ে বড় ফানুস উৎসব হয় কুয়াকাটা বৌদ্ধ মহাবিহারে। এই ফানুস ওড়ানোর উদ্দেশ্য হলো আকাশে ভাসমান গৌতম বুদ্ধের পবিত্র কেশধাতু প্রদীপ দিয়ে বন্দনা করা।
কলাপাড়ায় রাখাইন সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমাকে ঘিরে বুধবার (২০ অক্টোবর) দিনভর বৌদ্ধ মন্দির ও বিহারগুলোতে পূজা-পার্বণ, প্রদীপ প্রজ্বলন, ফানুস ওড়ানোসহ ধর্মীয় নানা আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিটি রাখাইন পাড়ার সদস্যরা তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বৌদ্ধবিহারগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি উদযাপন করছেন।
কুয়াকাটার কেরানীপাড়ার রাখাইনরা জানান, সকালে কুয়াকাটা শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে অষ্টমী পালন করা হয়েছে। দিনভর চলছে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি। বিকেল থেকে রাতভর চলে ফানুস উৎসব। এছাড়া মিশ্রিপাড়া, পক্ষিয়াপাড়া, বৌলতলীপাড়া, আমখোলা পাড়া, কোম্পানিপাড়া, হাড়িপাড়া, সোনাপাড়াসহ বিভিন্ন রাখাইন পল্লীতে প্রবারণা পূর্ণিমার অনুষ্ঠানকে ঘিরে রাখাইন সম্প্রদায় ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে। প্রবারণা পূর্ণিমার এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে পুলিশ প্রশাসন ছিলো বিশেষ সতর্ক অবস্থান।
বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মতে, ভিক্ষুরা আষাঢ় মাসের পূর্ণিমার দিন থেকে আশ্বিনের পূর্ণিমা পর্যন্ত বর্ষাবাস করেন। বর্ষাবাস শেষ হওয়া আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে প্রবারণা বা মারমা ভাষায় ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে বলা হয়।
বৌদ্ধধর্মাবলম্বী মারমারা বৈশাখী পূর্ণিমা বা বুদ্ধপূর্ণিমার চেয়েও ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে বা প্রবারণা উৎসবকে বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপন করেন।
কলাপাড়া উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, রাখাইনদের প্রবারণা পূর্ণিমার এই উৎসব পালনে সরকারিভাবে উপজেলার ২৪টি রাখাইন পল্লীর বৌদ্ধ বিহারের প্রত্যেকটিতে ৫০০ কেজি করে চাল বিতরন করা হয়েছে। এছাড়া শান্তিপূর্নভাবে উৎসব পালনে কলাপাড়া ও মহিপুর থানা পুলিশের ছিলো কঠোর নজরদারি।
একাত্তর/এআর