দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের দু'টি বড় সমুদ্রগামী জাহাজ মেঘনা প্রিন্সেস এবং মেঘনা এডভেঞ্চার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে। বুধবার নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি সুবিশাল দু’টি সমুদ্রগামী জাহাজের উদ্বোধন করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডোর আবু জাফর মো. জালাল উদ্দিন এবং একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক বাবু উপস্থিত ছিলেন। প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত স্বীকৃতি লাভ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে চলছে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসায় এটা সহজ হয়েছে। মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে’।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। মেঘনা গ্রুপের এ জাহাজগুলোও আমাদের জাতীয় পতাকা উড্ডীন করে বহিঃর্বিশ্বে আমাদের সক্ষমতার প্রকাশ ঘটাবে। এসব জাহাজে দেশীয় নাবিকদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়ও হবে’।
২০১৮ সালে জাপানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি মেঘনার নতুন জাহাজ দুটির প্রতিটি একসঙ্গে সাড়ে ৬২ হাজার টন পণ্য পরিবহন করতে পারবে। কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় এই দুইটিই দেশের সবচেয়ে বড় জাহাজ। জাহাজ দুইটির প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৬১৫ ফুট এবং প্রস্ত ১০৫ ফুট । মেঘনা প্রিন্স বাংলাদেশে পৌঁছায় ভাষাদিবস ২১শে ফেব্রুয়ারিতে।
বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে হস্তান্তরের পরই প্রস্তুতকারী দেশ জাপান থেকে মেঘনা প্রিন্সেস এবং এডভেঞ্চার চলে যায় ব্রাজিলে। ৩০ দিনের মাথায় সাড়ে ৬০ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত চিনি নিয়ে বাংলাদেশ ফিরে আসে মেঘনা প্রিন্সেস। এ নিয়ে মেঘনার বহরে সমুদ্রগামী জাহাজের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮। গ্রুপটি আরও চারটি সমুদ্রগামী বড় জাহাজ তৈরির কার্যাদেশ দিয়েছে।
মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজ সাগরে ভাসানোর ফলে পণ্য পরিবহন বাবদ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। আবার অন্য দেশের পণ্য পরিবহন করেও বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। পাশাপাশি দেশীয় নাবিকদের কর্মসংস্থানও বাড়বে। মেঘনা গ্রুপ বছরে ৭০-৮০ লাখ টন ভোগপণ্য ও শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করে। চিনি, ভোজ্যতেল, আটা-ময়দা, প্রাণিখাদ্য, সিমেন্ট, কাগজ, জাহাজনির্মাণ, এলপি গ্যাস, পানীয়, মোড়কজাতকরণ, অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ মোট ৪৮টি শিল্পকারখানা রয়েছে গ্রুপটির। নিজেদের বহরে থাকা সমুদ্রগামী জাহাজ দিয়ে নিজেদের পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি বিশ্বের নানা দেশের পণ্য পরিবহন করবে গ্রুপটি।