স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী হওয়ায় এবছর মেলা উৎসর্গ করা হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি। একইসাথে এবছর মেলার মূল থিম নির্ধারিত হয়েছে, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী'। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একুশে পদক ২০২১ প্রদানের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা আমার দেখা নয়াচীন বইটির ইংরেজি অনুবাদ New China 1952 এর মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে মেলায় সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মেলায় আগত ও অংশগ্রহণকারী প্রত্যেকের জন্য মাস্কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মেলায় প্রবেশের সময় প্রত্যেকের তাপমাত্রা পরিমাপ, হাত স্যানিটাইজ ও নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা হবে। মেলায় প্রবেশের ৩টি ও বাহির হবার জন্য পৃথক ৩টি পথ রাখা হয়েছে। এবারই প্রথম রমনা পার্ক প্রান্তে মেলায় প্রবেশ, বাহির ও গাড়ি পার্কিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে মেলা সংশ্লিষ্টদের দাবী ছিল।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে মাসব্যাপী মূলমঞ্চ স্থাপনের পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রায় ১৫ লাখ বর্গ ফুট এলাকা জুড়ে মেলা আয়োজন করা হয়েছে তা পরিধিতে গতবারের প্রায় দ্বিগুন। একাডেমি প্রাঙ্গনে ১৫৪টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৮৩৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৩৩টি প্যাভিলিয়ন, সুপরিসর লিটলম্যাগ চত্বর, শিশুচত্বর, ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র প্রকাশনা সংস্থার বই বিক্রি/প্রদর্শনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে। এছাড়া উদ্যানের পুর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে প্ররথক দুইটি ফুড কোর্ট রাখা হয়েছে।
এবারের মেলা ঝড়-বৃষ্টির সময়ে আয়োজিত হওয়ায় এ বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা দেয়া হয়েছে। এ আশঙ্কায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। বৃষ্টির পানি যেন সহজে নিষ্কাশন করা সম্ভব হয় সে উপযোগী করে প্রাঙ্গণ প্রস্তুত করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের ঝড়-বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করতে প্রত্যেক প্রবেশ পথে সুরক্ষা ছাউনি নির্মাণ কত্রা হয়েছে।
এছাড়া সম্প্রসারিত ও উন্নত টয়লেট ব্যবস্থা, পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কাছে ব্রেস্টফিডিং কর্ণার, হুইলচেয়ার সেবা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পর্যাপ্ত আলোক ব্যবস্থা, মশকনিধন অভিযান পরিচালনাসহ মেলাকে কেন্দ্র করে যেন কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতে না পারে সে লক্ষ্যে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি প্রান্তে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করবেন সংস্কৃতি সচিব মো. বদরুল আরেফীন, স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী এবং অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।
প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। ছুটির দিন সকাল ১১টায় মেলায় দরজা খুলবে।