জোর করে কিংবা আইন প্রয়োগ করে নয়, মানুষকে উদ্বুদ্ধ ও সচেতনতা সৃষ্টি করে মাস্ক ব্যবহারে বাধ্য করতে চায় পুলিশ। রোববার রাজধানীকে মাস্ক বিতরণ কর্মসূচি শুরু করে এমন কথাই জানালেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কর্মকর্তারা।
শান্তিনগর ট্রাফিক বক্স সংলগ্ন পথচারী ও জনসাধারণের মধ্যে মাস্ক বিতরণের সময় মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় জানান, মাস্ক পরার অভ্যেস, করোনামুক্ত বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পুলিশের বিশেষ কর্মসূচির অংশ হিসেবে জনগণকে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করছে ডিএমপি।
তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে আইজিপির নির্দেশনায় রোববার থেকে পুলিশ দেশব্যাপী করোনা বিরোধী প্রচার শুরু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ডিএমপির বিভিন্ন ইউনিট রোববার থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাস্ক বিতরণ শুরু করেছে’।
রাজধানীর মতো করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নগরের বিভিন্ন স্থানে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশও। মানুষকে মাস্ক ও লিফলেট বিতরণ করছে পুলিশ।
বেলা দুইটায় চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ে মাস্ক বিতরণের সময় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনারের উপ-কমিশনার এস এম মেহেদী হাসান বলেন, প্রথম ধাপে চলবে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। তবে প্রয়োজন হলে বিনোদন স্পট ও মানুষের সমাগম বেশি এমন জায়গায় চলবে অভিযান।
আর কমিশনার সালেহ মো. তানভীর জানিয়েছেন, প্রথম ধাপে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চলার পর দ্বিতীয় ধাপে কঠোর হবেন তারা। তখন মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হলেও গুণতে হবে জরিমানা। প্রয়োজন হলেও আরো বড় শাস্তিও হতে পারে।
রাজধানী ও বন্দর নগরীর মতো বিভিন্ন জেলা শহরের বড় বড় সড়কে নেমে যানবাহন চালক, আরোহী ও পথচারীদের মাস্ক পরতে বাধ্য করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সেই সাথে সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। একই সাথে মাস্ক ব্যবহারকারীদের ধন্যবাদ জানানো হচ্ছে ফুল দিয়ে।
জেলার পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ২১ মার্চ থেকে সারাদেশে একযোগে শুরু হলো মাসব্যাপী এই কর্মসূচি। মানুষের মাঝে শতভাগ মাস্ক নিশ্চিত করার লক্ষে কাজ করবে পুলিশ।
বগুড়ার শেরপুর মাস্ক নিয়ে নামে হাইওয়ে পুলিশ। করতোয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তা বিতরণ করা হয় গাড়িচালক ও যাত্রীদের মধ্যে। আর, নোয়াখালীতে মাস্ক পরায় জনসাধারণকে সচেতন করতে রোববার মাঠে ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন।
ঢাকার পাশেই মানিকগঞ্জে করোনা মোকাবিলায় রোববার সকালে জেলা শহরের শহীদ রফিক সড়কে জনসাধারণের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেন পুলিশ সুপার রিফাত রহমান। একই সময়ে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হয় নগরের পাটগ্রাম বাস টার্মিনাল এলাকায়।
শেরপুরের নালিতাবাড়ির উত্তর বাজারে পথচারীদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করে পুলিশ। নীলফামারীতেও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করে পুলিশ। রোববার দুপুরে শহরের চারটি মোড়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান।
‘মাস্ক পরার অভ্যাস, করোনামুক্ত বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি পালন করেছে পাবনা জেলা পুলিশ। এ উপলক্ষে সকালে পাবনা পুলিশ লাইনস মাঠ থেকে উদ্বুদ্ধকরণ র্যালি বের হয়। র্যালি শেষে জনসাধারণের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করেন পুলিশ সুপারসহ পুলিশ সদস্যরা।
অন্যদিকে, পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি ঠেকাতে নিজ উদ্যোগেই মানুষকে সচেতন হওয়ার অনুরোধ করেছে স্বাস্থ্যবিভাগ।