২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাকআউট’ পালন করা হবে। তবে কেপিআই এবং জরুরি স্থাপনাসমূহ এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
২৫ মার্চ রাতে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবন ও স্থাপনাসমূহে কোনো আলোকসজ্জা করা যাবেনা। তবে ২৬ মার্চ সন্ধ্যা থেকে আলোকসজ্জা করা যাবে।
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তথা সর্বসাধারণকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী 'অপারেশন সার্চলাইট' নামে এক নৃশংস সামরিক অভিযান চালায় নিরীহ-নিরস্ত্র মুক্তিকামী বাঙালির উপর।
এই অভিযানের নির্দেশনামা তৈরি করেন পাকিস্তানের দুই সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। এই নির্দেশনামার কোনো লিখিত নথি রাখা হয়নি। ২০১২ সালে মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজার আত্মজীবনীমূলক বই আ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওউন কান্ট্রি থেকে প্রথমবারের মতো অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়।
পিলখানায় ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) সদরদপ্তর, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ২৫ মার্চের প্রথম প্রহরে হামলা চালানো হয়। একই সময়ে ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, যশোর, রাজশাহী, রংপুর, সৈয়দপুরে হামলা চালানো হয়।
এ রাতে ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয় বাঙ্গালির স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। গ্রেফতারের পূর্বে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
অপারেশন সার্চলাইটের টার্গেট শুধু স্বাধীনতাকামী তরুণ ও সংগঠকরাই ছিল না। এ রাতে তারা নির্মম সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ চরিতার্থ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে হামলা চালিয়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী ছাত্রদের হত্যা করে পাকিস্তানি সেনা সদস্যরা। রমনা কালী মন্দির গুড়িয়ে দেয়া হয়।
বাংলা ও বাঙালি বিরোধী পাকিস্তানি বাহিনী কামানের গোলা ছুড়ে ধ্বংস করে বায়ান্নোর স্মৃতি বিজড়িত শহীদ মিনারকে। নারী, শিশু, বৃদ্ধ, শ্রমজীবী কেউ এ রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্মমতার হাত থেকে রেহাই পায়নি।
২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।