দখল আর দুষণে শুকিয়ে যাচ্ছে নেত্রকোণার মগড়া নদী। এলাকার লোকজনের অভিযোগ, এই নদী ধীরে ধীরে রূপ নিয়েছে মরা খালে। কেউ কেউ বলেন, ময়লার ভাগাড়। দুর্গন্ধে কোন কাজেই ব্যবহার করা যায় না নদীর পানি।
বহু সভ্যতার ন্যায় মগড়া নদী-বিধৌত হয়েই গড়ে উঠেছে নেত্রকোণার জনবসতি। নেত্রকোণা শহরের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত একেবারে সাপের মতো একেবেঁকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে এই জনপদকে।
ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে মগড়া নদীর সৃষ্টি। পূর্বধলা উপজেলার ভিতর দিয়ে ধলাই নামে প্রবাহিত হয়ে নেত্রকোণা সদর উপজেলার ত্রিমোহনীতে লাউয়ারি নদীর সঙ্গে মিলিত হয়ে মগড়া নাম ধারণ করেছে। নেত্রকোণা জেলায় মগড়া নদীর প্রবাহ বা গতিপথ সবচেয়ে বেশি।
মগড়া মানে হলো রাগী। নদীটি কখনও সোজা গতিতে চলেনি। নেত্রকোণা শহরকে সাপের মতো পেঁচিয়ে দূরে চলে গেছে। এমনকি বাইরে গিয়েও একসাথে এক মাইল পথও সোজা চলেনি। বাঁক নিয়েছে বারবার। সে জন্যই হয়তো এই নদীর নাম হয়েছে মগড়া।
তবে নেত্রকোনার ১৮৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য খরস্রোতা নদী মগড়া দখলে-দূষনে রূপ নিয়েছে মরা খালে। শহরের সব ময়লা ফেলা হয় এই খালে। নদী পাড়ের বেশিরভাগ বাসার পয় নিস্কাসনের ময়লাও এখানে পড়ে।
এমন অবস্থা দেখেও পৌরসভার প্যানেল মেয়র মহসীন আলম বলছেন, শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে সারাদিন কাজ করছেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। আর এলাকাবাসী বলছে, যথেষ্ট ডাস্টবিন না থাকায় নদীর পাড়ে ময়লা ফেলতে বাধ্য হন তারা।
পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নতুন আইন হয়েছে, দ্রুতই তা বাস্তবায়ন হবে। আর জেলা প্রশাসক বলেছেন, দখলের মহাযজ্ঞ ঠেকাতে এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আবারও শুরু হবে উচ্ছেদ অভিযান।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে ২০১৯ সালে ৩১৬ টি অবৈধ স্থাপনার ২৮৮টি দখল মুক্ত করে। কিন্তু হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায় সেই কর্যক্রম।
একাত্তর/ এনএ