হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব বারুণী স্নান উপলক্ষে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা এলাকায় ঐতিহ্যবাহী কালীদহ সাগরে নেমেছিল মানুষের ঢল।
যথাযথ ধর্মীয় উপাচার ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বুধবার (৩০ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাপ মোচনের জন্য পুণ্যার্থীরা এ স্নান উৎসবে অংশ নেন। এ উপলক্ষে বসেছিল মেলাও।
মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বিপুল সংখ্যক সনাতন ধর্মাবলম্বী বৈদিকমন্ত্র উচ্চারণসহ কালিদহ সাগরে পুণ্যস্নান করেন। এতে হাজারও ভক্তকুল ও পুণ্যার্থী অংশ নেন।
ভক্তকুল ও পুণ্যার্থীরা জানান, শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের গড়জরিপা গ্রামে প্রায় দেড়শ' বছর আগে কোচ সামন্ত আমল থেকে ঐতিহ্যবাহী গড়জড়িপা মাটির দুর্গ সংলগ্ন কালীদহ সাগরে বারুণী স্নান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
প্রতি বছরের মতো এবারও জেলা ও জেলার বাইরে থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরা ভোর থেকেই দলে দলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে আসেন এই কালিদহ সাগর পাড়ে।
তবে বর্তমানে ওই কালীদহ সাগর শুকিয়ে যাওয়ায় এর জৌলুস কমে গেছে। এরপরও এখনও এখানে অনেক পুণ্যার্থী তাদের নানা মনোবাসনা পূরণে এবং পুণ্যের আশায় ছুটে আসেন। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে স্নান ও পূজা অর্চনা শুরু হয়। স্নান শেষে পুণ্যার্থীরা সাগর পাড়ে গঙ্গাপূজা ও সংকীর্তনের আয়োজন করেন।
করোনার কারণে গত দুই বছর এ স্নান উৎসব না হওয়ায় এবার পুণ্যার্থীর সংখ্যা ছিল অনেক বেশি।
পুণ্যার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত পুণ্যার্থীদের গোসল শেষে শেষে কাপড় পরিবর্তনের জন্য নেই কোন ঘর, গোসলের জন্য নেই কোন ঘাট, খাবার পানি ও টয়লেটের নেই কোন ব্যবস্থা।
পুণ্যার্থী দুলাল চন্দ্র বলেন, 'গত দুই বছর করোনার কারণে সব সীমিত হলেও এবার বড় পরিসরেই হচ্ছে। এতে আমরা খুব খুশি।'
আরও পড়ুন: জলদস্যু আতঙ্কে বরিশালের তরমুজ চাষীরা
আরেক পুণ্যার্থী ইন্দ্রজিত বলেন, স্নান উৎসবে অনেক মানুষ জড়ো হয়েছেন মিলনমেলার মতো। অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েও ভক্তরা খুশি বলে জানান তিনি।
মেলায় ছোটদের খেলনা, প্রসাধনসামগ্রী, কাঠ, বাঁশ, বেত, মাটি ও লোহার নানা ক্ষুদ্রশিল্পের পসরা বসেছিল। ছিল মিষ্টি, বিন্নি, খই ও বাতাসার পসরাও।
একাত্তর/এসজে