প্রথম স্ত্রী ও দাবি করা দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ফাঁস হওয়া ফোনালাপের বিষয়ে এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে কথা বললেন হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।
বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) লাইভে এসে তিনি ফোনালাপগুলোর বিষয়ে বলেন, আমার স্ত্রীদের সঙ্গে আমার কথোপকথোন এগুলো একান্তই আমার ব্যক্তিগত বিষয় এবং পারিবারিক বিষয়। এই ধরণের ব্যক্তিগত কথোপকথন ও আলাপচারিতাকে জনসম্মুখে প্রকাশ করে আমার নাগরিক অধিকার, আমার ধর্মীয় অধিকার, আমার ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। যারা করেছেন তারা প্রচলিত আইনে চরম অপরাধ, ইসলামি শরিয়তের আলোকেও অনেক বড়ো অন্যায় এবং অপরাধ করেছেন। ইসলামী শরিয়তের বিধান লঙ্ঘন করার কারণে আল্লাহর আদালতে আমি বিচার দায়ের করবো।
তিনি আরও বলেন, প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে আমার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করার অপরাধে যারা দুষ্ট আমি তাদের বিরুদ্ধেও অনতিবিলম্বে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
ভিডিও বার্তায় ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান মামুনুল হক। তবে ফাঁস হওয়া ফোনালাপকে ভ্রান্ত বলে ভিডিও বার্তায় একবারও দাবি করেননি মামুনুল।
সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্ট থেকে বেরিয়ে হেফাজত নেতা মামুনুল হক তার প্রথম স্ত্রীকে ফোন করেন। যেই ফোনালাপটি প্রথমে ফাঁস হয়। সেখানে মামুনুল জানান, তার সঙ্গে থাকা ওই নারী জনৈক শহীদুল ইসলামের স্ত্রী। পরিস্থিতির কারণে তাকে দ্বিতীয় স্ত্রী বলতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। কথোপকথনটি পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো-
আসসালামু আলাইকুম
ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ
পুরো বিষয়টা আমি তোমাকে সামনে এসে বলব। ওই মহিলা যে ছিল সে হলো আমাদের শহীদুল ইসলাম ভাইয়ের ওয়াইফ। ওটা নিয়ে সেখানে পরিস্থিতি এমন হয়ে গিয়েছিল যে, এটা বলা ছাড়া.... আমাকে ইয়ে করে ফেলছে-বুঝছো?
আচ্ছা, বাসায় আসেন, তারপর যা বলার বইলেন
বললাম তো, তুমি বিষয়টা.. অন্যান্য কথা অন্যদের বলতে হবে। পরিস্থিতি এমন হয়ে গেছে। তুমি আবার মাঝে অন্যকিছু মনে কইরো না। তোমাকে কেউ জিজ্ঞেস করলে বলবা, হ্যাঁ, আমি বিষয়টা জানি।
ঠিক আছে
পরে আরেকটি কথোপকথন ফাঁস হয়, যা মামুনুলের সঙ্গে তার রিসোর্টে থাকা ‘দ্বিতীয় স্ত্রীর’ মধ্যকার বলে জানা যায়। সেখানে সেই নারী জানান, তিনি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার মায়ের একটি বন্ধ মোবাইল নম্বর দিয়েছেন। আর অন্য একজন যখন তাকে কোথায় বিয়ে হয়েছে জিজ্ঞেস করেছে, তখন তিনি বলেছেন, এটা জানেন না। মামুনুলের সঙ্গে কথা বলে নেবেন।
এরপর মামুনুলের দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে তার ছেলে আব্দুর রহমানের একটি অডিও ক্লিপও প্রকাশ করা হয়। যেখানে মামুনুলের দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা তার ছেলে আব্দুর রহমানে মাথা ঠা-া করতে বলেন। তিনি বলেন, ‘শোনো আজকে আমি মৃত্যুর হাত থেকে বের হলাম। সত্য গোপন থাকে না। আম্মু খারাপ করছে, আরেকজন খারাপ করছে বুঝলাম। কিন্তু তুমি তো ভালো করবা।’
এর প্রতি উত্তরে ছেলে আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমার ভালো করার দরকার নেই। আমার সঙ্গে কথা বলো না।’
আব্দুর রহমান আরও বলেন, ‘মেজাজ ঠা-া হবে তখন যখন ওনার সঙ্গে দেখা হবে। সেদিন যে কি হবে উনার! আমি মিডিয়ার সামনে বলবো তো, উনি কেমনে বন্ধুর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করলো। কেমনে বিয়ে করলো। কিসের ইয়েতে! এগুলো মিডিয়ার সামনে বলবো।’
সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টের ঘটনার পর হেফাজতের ভিতর ও বাহির থেকে প্রচুর সমালোচনা শুনতে হচ্ছে মামুনুল হককে। অনেকেই তার পক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবস্থান নিলেও সমালোচনার বেড়াজাল থেকে বেড়িয়ে আসতে পারছেন না এই হেফাজত নেতা।