টাঙ্গাইলের মধুপুরে একটি নৈশ কোচে যাত্রীবেশে ডাকাতি ও এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ১০ জনকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) বিকেলে হস্তান্তরকৃত আসামীদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করলে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ফারজানা হাসানাত ৬ আসামীর ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে টাঙ্গাইল কোর্ট পরিদর্শক তানবীর আহম্মেদ নিশ্চিত করেছেন।
টাঙ্গাইল র্যাব-১২ এর ৩ নম্বর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, সোমবার দিবাগত রাত ৮ টার দিকে রতনসহ গ্রেপ্তার ১০ জনকে ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলে আনা হয়। এরপর রাত সাড়ে ৮ টার দিকে তাদের গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে রবিবার (৭ আগস্ট) রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-১২ ও ১৪।
র্যাব জানায়, বাসের হেলপারের ছদ্মবেশে ২০১৮ সাল থেকে যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করে আসছিল রতন হোসেন (২১)। রতন এ চক্রের দলনেতা। তার অধীনে ১৩ থেকে ১৫ জন্য সদস্য রয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় দুই দফার কারাভোগও করেছেন তিনি। দ্বিতীয় দফায় ৯ মাস কারাভোগের পর জামিনে বের হয়ে আসেন এবং পুনরায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি করে দলনেতা হন রতন হোসেন।
ডাকাত দলের গ্রেপ্তার বাকি সদস্যরা হলেন- মো. আলাউদ্দিন (২৪), সোহাগ মন্ডল (২০), খন্দকার হাসমত আলী ওরফে দীপু (২৩), বাবু হোসেন ওরফে জুলহাস (২১), মো. জীবন (২১), আব্দুল মান্নান (২২), নাঈম সরকার (১৯), রাসেল তালুকদার (৩২) ও আসলাম তালুকদার ওরফে রায়হান (১৮)। এর আগে রাজা মিয়া, আউয়াল ও নুরনবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সব মিলিয়ে এ মামলায় ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজা মিয়া, আউয়াল ও নুরনবী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির তাদের জেলাহাজতে পাঠায় ডিবি পুলিশ। এই তিনজন বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে রয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, এ মামলায় গ্রেপ্তার ১০ জনকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে র্যাব। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ পর আজ মঙ্গলবার বিকেলে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে সামিদের আদালতে তোলা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৬ জনের ৩ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ২৪ থেকে ২৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। গভীর রাতে সিরাজগঞ্জ পৌঁছালে সেখান থেকে একদল ডাকাত যাত্রীবেশে ওই বাসে ওঠে। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর যাত্রীবেশে থাকা ওই তরুণ দল অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের বেঁধে ফেলে। কয়েক মিনিটের মধ্যে যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল, নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নেয়। এরপর এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে তারা। বাসটি বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে তিন ঘণ্টার মতো নিয়ন্ত্রণে রাখে। পরে পথ পরিবর্তন করে টাঙ্গাইল- ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালির স্তূপে বাসটি উল্টে দিয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়।
একাত্তর/এআর