দেশের প্রথম ছয় লেনের মধুমতি সেতু চালু হবার মধ্য
দিয়ে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হলো নড়াইলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর। সহজ
হবে রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ।
ঢাকা থেকে বেশি দূরের পথ না হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় নানা ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হতো নড়াইলবাসীকে। এ কারণে জেলার অর্থনীতিও ছিলো সংকুচিত।
নড়াইলের মানুষরা বলছেন, ঢাকার সাথে সেতু যেমন দূরত্ব ঘোচাবে, তেমনি উন্নয়নের ছোঁয়াও লাগবে দক্ষিণ-পশ্চিমের ১০ জেলায়। গতি পাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।
২০০৮ সালের কথা। সে সময় নড়াইলে এক নির্বাচনী জনসভায় কালনা পয়েন্টে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি কথা রেখেছেন। সময় একটু বেশি লাগলেও ১৪ বছর পর সেই মধুমতি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করে নির্বাচনী ওয়াদা পূরণ করলেন সরকার প্রধান।
৬৯০ মিটার দীর্ঘ মধুমতি সেতুর উদ্বোধনের যেন তর সইছিলো না নড়াইল,যশোরবাসীর। সেতু খুলে না দিলেও সকাল থেকে সেতুপ্রান্তে উপস্থিত সোনালী দিনের স্বপ্ন দেখা হাজারো মানুষ।
তারা বলেন, এতোদিন অনেক কষ্ট পেয়েছি নদী পার হতে। এখন রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ যেমন বাড়বে তেমনি আশপাশের জেলা শহরেও আসা-যাওয়া সহজ হবে।
নড়াইলবাসী আরও বলেন, এই সেতু তাদের দীর্ঘদিনের ফেরি পারাপার ও ভোগান্তি লাঘব করবে। রাজধানী ঢাকা ও প্রতিবেশী শহর কলকাতার সঙ্গে যাতায়াত সহজ হবে।
এতোদিন নড়াইল, যশোরের মানুষজনদের মধুমতি নদী পার হয়ে পদ্মা সেতুতে উঠতে হতো। পণ্য পরিবহনেও ছিলো একই ভোগান্তি।
নড়াইল ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানির মধ্যে সসংযোগস্থাপনকারি এ সেতুর ফলে ঢাকার সাথে নড়াইল, যশোরসহ দক্ষিণ পশ্চিমের ১০ জেলার দূরত্ব কমবে প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
নড়াইলের দূরত্ব আগে পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছিল ২২৫ কিলোমিটার কিন্তু ফেরি পারাপার ও অপ্রশস্ত রাস্তাঘাটের কারণে সময় লাগতো ৬-৭ ঘণ্টা।
এখন ৮৬ কিলোমিটার দূরত্ব কমে এ পথের দূরত্ব দাঁড়িয়েছে ১৩৯ কিলোমিটার। প্রশস্ত রাস্তাঘাট ও ফেরিবিহীন যাতায়াতে ঢাকা যেতে সময় লাগবে মাত্র আড়াই ঘণ্টা।
খুলনা বিভাগের দশ জেলা খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর,নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ,মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া।
রাজধানীর ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে নড়াইল হাব হিসেবে পরিচিতি পেতে যাচ্ছে। এশিয়ান হাইওয়ে প্রকল্পের আওতায় এই সেতুই প্রথম উদ্বোধন হলো।
আরও পড়ুন: হামলা ও আত্মগোপনের প্রশিক্ষণ নিয়েছিল তারা: র্যাব
নড়াইল-১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি বলেন, মধুমতি সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা কী কী প্রভাব পড়বে তা এখন অনুমান করা যাবে না।
তিনি বলেন, আমূল বদলে যাবে এই অঞ্চলের অর্থনীতি। নতুন করে শিল্প বিপ্লব ঘটবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ তিনি আমাদের জন্য এই সুযোগ করে দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা জানান, মধুমতি সেতুর কারণে আর্থ-সামাজিক, ব্যবসা-বাণিজ্য সব ক্ষেত্রেই উন্নতি হবে। এলাকার সব পেশার মানুষ মধুমতি সেতু দিয়ে তাদের জীবনমান পরিবর্তন আনতে পারবে।
একাত্তর/আরবিএস