এ কান্না কোনো শোকের কান্না নয়। প্রচণ্ড গরম থেকে রক্ষা পেতে সৃষ্টিকর্তার কাছে এক পশলা বৃষ্টি প্রার্থনা করে কাঁদছেন এই মানুষগুলো। এ যেন উপায়ান্তহীন মানুষের সর্বশেষ প্রচেষ্টা। এই প্রচণ্ড গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য নামাজ আদায়ের পর মোনাজাতে একটু বৃষ্টির আশায় অঝোরে কাঁদছেন মুসল্লিরা।
তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। পারদ চড়তে চড়তে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে। গত কয়েকদিনে সূর্যের বেপরোয়া তাপে পুড়ছে ফসলের মাঠ।
স্বস্তিতে নেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের মানুষেরাও। প্রচণ্ড রোদে হাঁসফাঁস অবস্থা প্রাণীকুলের। কোথাও মিলছে না কোনো স্বস্তি।
রোদের এমন তীব্রতা দেখা যায়নি খুব কাছাকাছি সময়ে; ফলে বাধ্য হয়েই দেশে জারি করা হয়েছে হিট এলার্ট। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান; অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বাধ্য হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে অনলাইন ক্লাস নেয়ার। আর স্কুল-কলেজ তো বন্ধই রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
আবহাওয়া অফিস বলছে, বেশ কয়েকদিন চলবে সূর্যের এমন আক্রমণ। তীব্র বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থায় থেকে নিস্তার নেই। অথচ তীব্র বৃষ্টি দূরে থাক, মিলছে না এক ফোঁটা বৃষ্টির দেখাও। তাইতো এই মানুষগুলো একটু বৃষ্টির জন্য চোখের পানি ছেড়ে আল্লাহরে কাছে দু’হাত তোলে অঝোরে কাঁদছেন একটু বৃষ্টির জন্য।
তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে ও রহমতের বৃষ্টি বর্ষণের জন্য সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টায় রাঙ্গাবালি উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের লঞ্চ ঘাট সংলগ্ন এলাকার মসজিদ-ই-নূর জামে মসজিদ মাঠে ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষে আল্লাহর রহমত কামনা করে তাপদাহ থেকে মুক্তি এবং বৃষ্টি বর্ষণের জন্য মোনাজাত করা হয়।
এর আগে দীর্ঘসময় ধরে মসজিদে দোয়া-দরুদ পাঠ করেন নামাজে অংশ নিতে আসা মুসল্লিরা। বিশেষ এই নামাজের মোনাজাত পরিচালনা করেন মসজিদ-ই-নূর-এর পেশ ইমাম মাওলানা ক্বারী মোহাম্মদ আল আমিন ইউনুস।
নামাজ শেষে মাওলানা ক্বারী মোহাম্মদ আল আমিন ইউনুস বলেন- দাবদাহ থেকে নিষ্কৃতি পেতে আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আকুতি ভরে বৃষ্টির জন্য দোয়া করতে হয়। এই নামাজকে ইস্তিসকার নামাজ বলে।
শুধু রাঙ্গাবালীই নয়, প্রচণ্ড গরম থেকে মুক্তির আশায় আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে ইস্তিসকার নামাজ আদায়ের খবর এসেছে চুয়াডাঙ্গা ও যশোরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও।