ঝালকাঠিতে একটি মাদ্রাসায় শোরগোল করায় ৮ শিশু শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে ওই মাদ্রাসার একটি কক্ষে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সদর উপজেলার পোনাবালিয়া গ্রামের কে.এ খান হাফেজী মাদ্রাসায় শনিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে এ ঘটনা ঘটেছে।
বিক্ষুব্ধ অবিভাবক ও এলাকাবাসী এদিন রাতে অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এসময় মাদ্রাসা থেকে ৪ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ, এলাকাবাসি ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, করোনাকালীন সময়ে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কে.এ খান হাফেজী মাদ্রাসা চালু রেখে পড়াশোনা চালিয়ে আসছিলেন মাদ্রাসাটির একমাত্র শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ। শনিবার বিকেলে তিনি মাদ্রাসায় ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করছিল। তাদের কথার শব্দে ওই শিক্ষকের ঘুম ভেঙে যায়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহ কক্ষের দরজা আটকে ৮ শিক্ষার্থীকে বেদম প্রহার করেন। শিক্ষার্থীরা কান্নাকাটি করতে থাকলে সব শিক্ষার্থীকে কক্ষের মধ্যে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষক। মারধরের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য সকল শিক্ষার্থীকে ভয়ভীতিও দেখানো হয়।
মাগরিবের নামাজের সময় পেছন থেকে কৌশলে নলছিটি উপজেলার বারইকরণ গ্রামের প্রবাসী আব্দুর রহিমের ছেলে মো. সিয়াম (৯) পালিয়ে কাঁদতে কাঁদতে পোনাবালিয়া বাজারে গেলে এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পারে।
আরও পড়ুন: হর্ন বাজানো নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৩০
পরে বাজারের শতাধিক ব্যক্তি মাদ্রাসা ঘেরাও করে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে আটক করে। এসময় আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে রাতেই ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশ ওই মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে আটক করে নিয়ে আসেন।
এ ঘটনায় রোববার (৮ আগস্ট) সকালে নির্যাতনের শিকার ১১ বছরের শিশু শিক্ষার্থী মো. আমিরুল ইসলামের বাবা শামিম খলিফা বাদি হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ উল্লাহকে আসামী করে ঝালকাঠি থানায় শিশু আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান জানান, শিশু শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের দায়ে শিশু আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। আসামীকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।