পার্বত্য চট্টগ্রামে বিনামূল্যের সরকারি সৌর বিদ্যুত বিক্রি করার অভিযোগ করেছেন পাহাড়িরা। তাদের অভিযোগ, বহু পরিবার টাকা দিয়েও বিদ্যুতের সরঞ্জাম পাননি। একাত্তরের অনুসন্ধানে এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এতে উঠে এসেছে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের মানুষ ঠকানোর গল্প।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা তিন পার্বত্য জেলা। দুর্গম বলেই এই তিন জেলার গ্রামাঞ্চলে পৌছানো যায়নি বিদ্যুতের আলো। তাই সেখানকার ঘরে ঘরে বিনামূল্যে সৌর প্যানেল, ব্যাটারি ও বাতি দেয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার।
প্রথম দফায় সাড়ে ১৩ হাজার পরিবারের হাতে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিদ্যুতের সামগ্রী তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের এই উদ্যোগ প্রশংসাও কুড়ায় সবার। সেই সৌর বিদ্যুত কতোটা বদলে দিলো পাহাড়ি জনপদ; তা জানতে গিয়ে জানা যায় প্রধানমন্ত্রীর বিনামূল্যের উদ্যোগটিকে বাণিজ্যিক হাতিয়ারে পরিণত করেছেন স্থানীয় নেতারা।
সৌর বিদ্যুত দিয়ে গরিব মানুষদের কাছে আদায় করা হয়েছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। বান্দরবানের রুমা উপজেলার চার নম্বর গালেঙ্গা ইউনিয়নের কালাপড়া, এডেন পাড়া, রামদু পাড়াসহ সব পাড়ার মানুষদেরই এই সেবা নিতে হয়েছে টাকার বিনিময়ে।
তথ্য অধিকার আইনে সংগ্রহ করা তালিকা বলছে, কালাপাড়ার এলিজাবেথ ও মেরিনা ত্রিপুরা সৌর বিদ্যুৎ পেয়েছেন। কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে তারা সেটি পাননি। এমন অনেকে আছেন যারা টাকা দিয়েছেন কিন্তু বিদ্যুত সুবিধা পাননি।
নিজের লোকদের দিয়ে এই টাকা আদায় করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। যারা আবার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। একাত্তরের সাংবাদিক আসার খবরে পাড়াবাসীকে টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করার নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান ও তাঁর সহযোগীরা।
যদিও পরে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন চার নং গ্যালেঙ্গা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সস্পাদক যোগেশ ত্রিপুরা। তবে গালেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের শৈউসাই মারমা দোষ চাপাচ্ছেন যোগেশ ত্রিপুরাসহ ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের উপর ৷
শুধুমাত্র গালেঙ্গা ইউনিয়নে অন্তত ৪শ পরিবারের কাছ থেকে চেয়ারম্যান হাতিয়ে নিয়েছেন ৮ লাখ টাকা। সেই হিসেবে সরকারের দেয়া সাড়ে তের হাজার সৌর বিদ্যুৎ থেকে কমপক্ষে ৩ কোটি টাকা বাণিজ্য করেছেন স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা৷
একাত্তর/ এনএ