রাজবাড়ী পৌরসভার যত্রতত্র তৈরি হয়েছে ময়লার ভাগাড়। এমনকি পৌরসভার মধ্যেই রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চিলিক মহাসড়কের উপরে ময়লা আবর্জনা ফেলছে খোদ পৌরসভা। এতে জন্ম নিচ্ছে মশা-মাছি ছড়াচ্ছে বিভিন্ন প্রকার রোগ জীবাণু।
এদিকে রাজবাড়ী পৌরসভা কার্যালয় জানায়, পৌরসভায় বর্তমানে ৭০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, ১৫ জন সুপারভাইজার ময়লা পরিষ্কারের জন্য ২ টি ট্রাক ও একাধিক ভ্যান রয়েছে।
আরও পড়ুন: বরিশালে আজ করোনায় ১০ মৃত্যু
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রয়েছে কয়েক শত দোকান, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানসহ বসতবাড়ি। তাছাড়া এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে হাজার হাজার মানুষ। জনবসতি ও গুরুত্বপূর্ন সড়কের উপরেই ময়লা আর্বজনা ফেলে স্তপ করে রাখছে পৌরসভার পরিচ্ছনতাকর্মীরা। শুধু সড়কে নয় পৌরসভার আবাসিক এলাকা ১ নম্বর বেরাডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কগুলোতেও স্তুপ করে রাখা হয়েছে ময়লা।
এ সময় শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা দিয়ে চলাচলরত পথচারী আলেয়া বেগম বলেন, দিনের পর দিন এমন একটি গুরুত্বপূর্ন সড়কের উপর ময়লা ফেলছে পৌরসভারকর্মীরা। মাস্ক পরে থেকেও নাক চেপে না ধরে চলার উপায় নেই।
শ্রীপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ খায়রুল ইসলাম বলেন, শুধু আসা যাওয়ায় ভোগান্তি নয়, এই ময়লা থেকে জন্ম নিচ্ছে মশা-মাছি, ছড়াচ্ছে দুগর্ন্ধ, আশেপাশের বাড়ির বাচ্চারা অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। রাতের বেলায় দুগর্ন্ধে ঘুমানোও যায় না। খাওয়া-দাওয়া করতেও কষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি দেখারও যেন কেউ নেই।
শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার ব্যাবসায়ী আব্দুর রহমান মন্ডল বলেন, এই ময়লা আবর্জনার কারনে শ্রীপুরে থাকা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হওয়ার পথে। কোন দোকানেই শ্রমিক থাকতে চায় না। এই দুগর্ন্ধ নিয়ে জীবন যাপন করা এখন অসম্ভব হয়ে পরেছে। কমে গেছে প্রতিটি দোকানের বেচাকেনা। কাস্টমার বিভিন্ন পন্য ক্রয় করতে আসছে কিন্তু নাক বন্ধ করে চলে যাচ্ছে।
রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মোঃ আলমগীর শেখ তিতু বলেন, মশক নিধনে পৌরসভা ব্যপক কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিদিন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছে। মশক নিধনের ঔষুধ ছেটানো হচ্ছে। এমনকি সিটি কর্পোরেশনে যে ঔষুধ ছেটানো হয় সেই মান সম্মত ঔষুধ ক্রয় করা হয়েছে। আর ময়লা ফেলার বিষয়টি হলো আপাতত পৌরসভার ময়লা ফেলার কোন যায়গা নেই, তাই সড়কের পাশেই ময়লা ফেলা হচ্ছে। এতে পথচারীসহ এলাকাবাসীর সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। তবে পৌরসভার ময়লা ডাম্পিং করার জন্য ১১ কোটি টাকা ব্যায়ে শ্রীপুরের মাঠে কাজ চলছে। যে প্রকল্পের সময় আছে আরো ১ বছর। আশা করা যাচ্ছে আগামী বছরের মধ্যেই একটি ময়লামুক্ত পরিচ্ছন্ন পৌরসভা গড়া সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ ইব্রাহিম টিটন বলেন, পৌরসভার ময়লা আর্বজনা পরিষ্কার পরিচ্ছনা ও ডেঙ্গু বিষয়ক একটি সভা করা হয়েছে। ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে প্রতিরোধটাই মূল কথা। মশা যাতে না বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি রাজবাড়ী জেলার জন্য ৬ শত ডেঙ্গ শনাক্ত কীট পাওয়া গেছে। যা চারটি উপজেলায় ৪ শত ও রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ২ শত বন্টন করা হয়েছে। এ ধরনের রোগী শনাক্ত হলে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে। তারপরও সকলকে সচেতন থাকতে হবে।
একাত্তর/এআর