প্রথমবারের মতো বিদ্যুতের সংযোগ পেলেন কুড়িগ্রামের চারটি চর-দ্বীপচর এলাকার মানুষ। চর প্রথমআলো, চর রসুলপুর, চর কাফনা ও মাঝের চরে, এই চার অঞ্চলে শুরু হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। এতে দারুণ খুশি চরের মানুষ। রাতের বেলায় এই প্রথম তাদের ঘরে আলো জ্বলবে। মোবাইলে চার্জ দিতে আর নদী পারাপার করতে হবে না। আগের মতো জ্বলবে না হারিকেন অথবা কুপি। বদলে যাবে চরের মানুষের জীবন।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দুপুরে আলোর চর পাঠশালা চত্বর থেকে আনুষ্ঠানিক বিদ্যুৎ সরবরাহ উদ্ধোধন করেন জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম।
কুড়িগ্রাম লালমনিহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির একজন কর্মকর্তা জানান চর প্রথমআলো, চর রসুলপুর, চর কাফনা ও মাঝের চর এলাকায় আজ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলো। ধাপে ধাপে সব চরেই বিদ্যুৎ চলে যাবে।
বিদ্যুৎ পেয়ে ভীষন খুশী আলো চরের কৃষক মফিজুল ইসলাম (৪৫)। তিনি জানান, আমরা জীবনে ভাবিনি আমাদের ধরলা ব্রক্ষপুত্র ও দুধকুমোর নদ-নদীর দুর্গম চরে এভাবে সরকার বিদ্যুতের ব্যবস্থা করবে। জীবনের অধিকাংশ সময় হারিকেন আর কুপি দিয়ে আমরা কাটালাম। শেষ জীবনে রাতে আলোর মুখ দেখবো। এখন আমরা আর স্যালোর উপর নির্ভর করবো না। কারেন্টের মাধ্যমে সেচ দিয়ে জমিতে পানি দিবো। কারেন্ট দিয়ে ধান ভাঙ্গাবো। পুরো জীবন আমাদের বদলে যাবে। এ জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান চর ও দ্বীপ চরের মানুষরা।
জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম বলেন, এরকম প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের মানুষ বিদ্যুৎ পাবে কোনদিন ভাবতেই পারেনি। তা সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কারণে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে সকলের ঘরে ঘরে আলো পৌঁছে যাবে। আশাকরি এ বছরে কুড়িগ্রামের সকল চর-দ্বীপচরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। আজ শুভ সুচনা হলো মাত্র।
কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি জেনারেল ম্যানেজার মো.মহিতুল ইসলাম জানান, চর-দ্বীপচরগুলোতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া একটি চ্যালেঞ্জ। নদ-নদীর তলদেশ দিয়ে কেবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযোগ দিতে হচ্ছে যা ব্যায়বহুল ও ভীষন কষ্টের। তবুও আমরা দুর্গম এলাকার মানুষের জন্য এ কাজ করবো।
আরও পড়ুন: হোমনায় আটক ৪ নারী ছিনতাইকারী
কুড়িগ্রাম লালমনিহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার খাদেমুল ইসলাম জানান, মুজিববর্ষে শতভাগ অফগ্রিড এলাকা বিদ্যুৎতায়ন করা হবে। এই লক্ষ্যে কুড়িগ্রাম জেলার ৯ উপজেলার ব্রক্ষপুত্র, দুধকুমার ও তিস্তা নদীর তলদেশ দিয়ে কেবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ৪০টি চরাঞ্চলের ১৭ হাজার পাঁচশ' ৬০ জনকে সংযোগ দেওয়া হবে। ১৮টি পয়েন্টে কেবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযোগ দেওয়া হবে। এরমধ্যে আজ দুইটির চালু করা হলো। বাকী ১৬টির কাজ চলমান রয়েছে। এ দুইটি হলো নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি।
একাত্তর/আরবিএস