মানিকগঞ্জের ঘিওরে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক কলেজ ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত মোঃ শরিফ মিয়া (৪০) দুই সন্তানের জনক। আগুনে কাজল আক্তার নামের ওই কলেজ ছাত্রীর শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। গুরুতর আহত ওই ছাত্রী বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের দ্বিমূখা গ্রামে। অভিযুক্ত বখাটে মোঃ শরিফ মিয়ার বাড়ি একই এলাকায়। সে দুই সন্তানের জনক।
কাজল আক্তারের ফুফাতো ভাই ফজলুল হক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মিরান খাঁন বলেন, বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের দ্বিমুখা গ্রামের মৃত কাজী ময়নালের মেয়ে কাজল আক্তার (২৫) মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের বিএ ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী। ঐ গ্রামের বখাটে শরিফ মিয়ার (৪০) মেয়েকে প্রাইভেট পড়ানোর সময় এক পর্যায়ে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় এবং সেখান থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
আরও পড়ুন: খন্দকার মোশতাকের পুত্র ও নাতির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
কাজলের মা বলেন, এক বছর আগে পারিবারিকভাবে মেয়েটির মোবাইল ফোনে বিয়ে হয় শিবালয় উপজেলার ফেচুয়াধারা গ্রামের সাউথ আফ্রিকা প্রবাসী সোহেল রানার সাথে। স্বামী প্রবাসে থাকায় কাজল তার বাবার বাড়ি থেকে পড়াশোনা চালিয়ে আসছিলেন। তবে বিয়ের পর থেকে শরিফ তাকে নানাভাবে উত্যক্ত করত।
সোমবার রাতে বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে থাকায় কৌশলে কাজলকে বাড়ির পাশে কাঠ বাগানে ডেকে নিয়ে যায়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শরিফ মেয়েটির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ডাক চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে শরিফ পালিয়ে যায়। মেয়েটি কাঠবাগানের পাশেই পানি থাকায় শরীরে আগুন নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দেয়। আশেপাশের লোকজন তার চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে এসে মুমূর্ষু অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে।
মেয়েটিকে গুরুতর অবস্থায় প্রথমে স্থানীয় মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পরে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে রেফার্ড করেন। তার অবস্থা সংকটজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: রাত থেকে বন্ধ হচ্ছে পাবজি, ফ্রি-ফায়ার
ঘটনা শোনার পর বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ হাফিজুর রহমান ও ঘিওর থানার ওসি মোঃ রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭ টায় কাজল আক্তারের মা রেণু বেগম ঘিওর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ঘিওর থানার ওসি মোঃ রিয়াজউদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছি। মেয়ের মা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঢাকার হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
একাত্তর/এসজে