কুমিল্লা দেবীদ্বারে কিশোরীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুককে রোববার (২৯ আগস্ট) পুলিশ লাইন্সে ক্লোজ করা হয়েছে।
তবে, সোমবার রাতে কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, ‘ঘুষ দাবির বিষয়টি জানা নেই, কিন্তু ধর্ষণ চেষ্টা মামলা তদন্তে ওই তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতি থাকায় তাকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।’
গত ২০ আগস্ট দুপুরে দেবীদ্বার উপজেলার কুরছাপ গ্রামে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা তুলে নিতে অভিযুক্ত হাসান এবং তার ভাই কাউছার আহম্মেদসহ অন্যান্য আসামিরা ভুক্তভোগী কিশোরী ও তার মা-বাবাকে প্রকাশ্যে লাঠিপেটা করেন। এ সময় ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
পরে নির্যাতনের ঘটনায় ২৬ আগস্ট রাতে দেবীদ্বার থানায় একই গ্রামের হাসান, তার ভাই কাউছার, বাবা নুরুল ইসলামসহ আটজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন কিশোরীর বাবা জামাল হোসেন। পরদিন জেলার বিভিন্ন জায়গায় র্যাব-পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। তবে এ ঘটনার মূল আসামী কাউছার ও হাসানকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। আগে ২৪ মে কুরছাপ গ্রামের কিশোরীকে তারই চাচাতো ভাই হাসান কর্তৃক ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে দায়ের মামলার তদন্ত করছিলেন এসআই ওমর ফারুক।
আরও পড়ুন: যাত্রাবাড়ীতে পরকীয়ার জেরে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর মা জেসমিন আক্তার অভিযোগ করছেন, ‘‘ধর্ষণ চেষ্টাকারীরা মামলা তুলে নিতে বারবার আমাদের মারধর করেছেন। আমাদের জানের নিরাপত্তা নেই। হয় আসামী ধরেন, না হয় মামলাটি রেফার করেন।
এ কথা এসআইকে বলা হয়। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুক কোনটিই করেননি। বাড়িতেই আসলেই বলেন ‘আরও টাকা লাগবে’। তদন্তের কাজে তিনবার বাড়িতে আসলে প্রতিবারই টাকা দেয়া হয় তাকে। সে (এসআই) আমার থেকে আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করেন।’’
এ,দিকে ঘুষ দাবির অভিযোগে এ ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়লে তাকে তাৎক্ষনিক পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোমবার রাতে কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, ‘‘ঘুষ দাবি কিংবা গ্রহণের বিষয়টি এখনো প্রমাণিত হয়নি, এটা তদন্ত করে দেখতে হবে। তবে ধর্ষণ চেষ্টা মামলাটির তদন্তে ওই তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতি ছিল, তাই তাকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।’’
একাত্তর/এসজে