বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ে শেরপুরে গাড়ি চাপায় কলেজ ছাত্র শারদুল আশিষ সৌরভের মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুরের সদর সিআর আমলী আদালতে ওই নালিশি মামলাটি দায়ের করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট আশরাফুন্নাহার। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাসান ভূঁইয়া বাদীর জবানবন্দি নিয়ে মামলাটি গ্রহণ করে তা পূর্ববর্তী মামলার প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে আদেশের জন্য রেখেছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুকুমের আসামি এবং স্থানীয় দলীয় নেতাদের বাইরে আসামি করা হয়েছে সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজামান কামাল, লক্ষ্মীপুরের সাবেক এমপি আনোয়ার হোসাইন খান, শেরপুরের বাসিন্দা সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম ও আব্দুস সামাদ, পুলিশের সাবেক আইজি আব্দুল্লা আল মামুন, ডিআইজি আনিছুর রহমান, শেরপুরের সাবেক পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগমসহ পুলিশের আরও কয়েক জনকে।
আন্দোলনে গাড়িচাপায় সৌরভের মৃত্যুর ঘটনায় এ নিয়ে দুটো মামলা হলো। এর আগে, সৌরভের বাবা ছোহরাব হোসেন বাদী হয়ে ২৭ আগস্ট প্রথম মামলাটি করেন। ওই মামলায় সাবেক হুইপ আতিউর রহমান আতিক ও সাবেক এমপি ছানোয়ার হোসেন ছানুসহ ৮৭ জনকে স্বনামে এবং আরো ২০০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বিকেলে শেরপুর শহরের খরমপুর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ মিছিলে আওয়ামী লীগের একাংশের পাল্টা মিছিল থেকে গুলি চালানো হলে সবুজ নামে এক কলেজ ছাত্র ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। ওই সময়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বহনকারী সরকারি গাড়ি চাপায় প্রাণ হারায় কলেজ ছাত্র শারদুল আশিষ সৌরভ (২২) ও মাহবুবুল আলম (১৯)।
ওই ঘটনায় প্রথমে সৌরভের বড় ভাই সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে সাবেক এমপি ছানোয়ার হোসেন ছানু ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমানের নেতৃত্বে বের করা ২৫ জনকে স্বনামে ও আরো ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করে ১২ আগস্ট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। একইদিন মাহবুবের ঘটনায় পৃথক মামলা দায়ের করেন তার মা মাফুজা খাতুন। পরবর্তীতে দুটো মামলাতেই সংশোধিত অভিযোগ দায়ের হয়। এতে সবুজের ঘটনায় ১৯৩ জন এবং মাহবুবের ঘটনায় ৮১ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া সৌরভের ঘটনায় তার বাবা ছোহরাব হোসেন বাদী হয়ে দায়ের করেন আরো একটি পৃথক মামলা।