পঙ্কিল রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে না আনার আহবান জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক বিশ্বাস থাকতে পারে। কিন্তু সে রাজনৈতিক বিশ্বাস, বিশ্বাসের পর্যায়ে থাকবে। সেই রাজনীতি আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌহদ্দির মধ্যে আনবো না। সেখানে আমি সব শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্ব যেটা সেটা পালন করবো।
সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ১৯তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন, রিসার্চ ফেয়ার এবং অ্যাকাডেমিক এক্সিলেন্ট অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল লক্ষ্য ছিল একটি সমতার ভিত্তিতে সমাজ গঠন করা। কিন্তু আমার যে রাষ্ট্র পেয়েছি সেখানে সমতার রাষ্ট্র গঠন করা হয়নি। বৈষম্য ছিল এবং তারই ফলশ্রুতিতে জুলাই-আগস্টের আন্দোলন হয়েছে। আমার ছিলাম অধিকার বঞ্চিত প্রজা হিসেবে। নানা ধরনের কালা কানুনে রাষ্ট্র আমাদের ওপর জেঁকে বসেছিল। যার ফলে সে রাষ্ট্রে গুম-খুন হচ্ছিলো। আর এ বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ বাহন হচ্ছে শিক্ষা।
তিনি এ সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, শিক্ষায় সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার চেষ্টা যেমন করছি, তেমন শিক্ষকদের মান সম্মত শিক্ষা প্রদানের লক্ষে নীতিবোধ সমুন্নত রাখার পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজস্ব রাজনীতির বিশ্বাস আনা যাবে না। তা পরিহার করতে হবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ দিবস উদযাপন ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান শুধু এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একার অনুষ্ঠান নয়। এটি পুরো বাংলাদেশের অনুষ্ঠান । মেধাকে লালন, মেধার চর্চার যদি আমরা করতে পারি তাহলে এ নতুন বাংলাদেশের সামনে যে যাত্রাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না।
নিজের শিক্ষকতা জীবনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমি ৪০ বছর নিষ্ঠার সাথে শিক্ষকতা করেছি। জ্ঞানত কখনও ফাঁকি দেইনি। সব সময় নীতিবান শিক্ষক হিসেবে আদর্শ ধারণ করতে চেষ্টা করেছি, সব সময় পারিনি, কিন্তু করেছি।
উপদেষ্টা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে শিক্ষক রিকোয়েন্টমেন্ট। সেখানে শিক্ষক রিকোয়েন্টমেন্ট হতো না। সেখানে ভোটার রিকোয়েন্টমেন্ট হতো। আমি বিশ্বাস করতে চাই, এই ধরনের একটা বাস্তবতা, আমরা পার হয়ে আসতে চাই। কাজেই নতুন ভাবে আমাকে সব কিছু ঢেলে সাজাতে হবে। আমরা যদি আশা করি আমাদের ছাত্ররা নিয়মিত ক্লাস করবে,আমরা যদি আশা করি তারা মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করবে, ফলে সেই পরিবেশ আমাকে সৃষ্টি করতে হবে। তাহলে অবশ্যই আমাদের শিক্ষকদের যে নিজস্ব যে নীতিবোধ সেটাকেও অনেক সমুন্নত রাখতে হবে। শিক্ষক হিসেবে আমার যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব আমাকে পালন করতে হবে।
নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইসমাইলের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলী, উপ- উপাচার্য অধ্যাপক ড.রেজওয়ানুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ হানিফ (মুরাদ), নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল ফারুকসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ, বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, হলের প্রভোস্টবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দসহ আরও অনেকে।