ভারতের টিভি অভিনেত্রী তুনিশা শর্মার মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। প্রতিদিনই দেশটির গণমাধ্যমে শিরোনাম হচ্ছেন এই মিনি পর্দার তারকা। তুনিশার কথিত আত্মহত্যার ঘটনায় প্রেমিকা গ্রেফতার এবং এর সঙ্গে অন্যান্য ঘটনা এখন আলোচনার তুঙ্গে।
২৪ ডিসেম্বর ‘আলিবাবা: দস্তান-এ-কাবুল’ টিভি সিরিয়ালের সেটে গলায় ফাঁস অবস্থায় তুনিশার মরদেহ পাওয়া যায়। সেদিন সে সকাল থেকে ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন তিনি। দুপুরের বিরতিতে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে গলায় ফাঁস লাগিয়ে নিজেকে শেষ করে দেন তুনিশা শর্মা।
তার মৃত্যুরহস্যের কোন কিনারা হয়নি। তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে সহ-অভিনেতা ও সাবেক প্রেমিক সিজান খানকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। ওই সিরিয়ালে মারিয়মের চরিত্রে অভিনয় করতেন। আর নায়ক সিজান হতেন আলিবাবা।
তুনিশার মা মেয়ের আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগ আনার পরপরই সিজানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তুনিশা নিজের নিজের জীবন নিয়েছেন। তবে এর পেছনে কারো কোন প্ররোচনা ছিলো কিনা, সেটি তারা তদন্ত করে দেখছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সিজানের সঙ্গে বিচ্ছেদের ১৫ দিন পর সিরিয়ালের সেটে জীবন শেষ করে দিয়েছেন তুনিশা। যে ঘটনা বিনোদন দুনিয়ায় আলোড়ন ফেলেছে। ‘আত্মহত্যা’ বলে মানতে পারছেন না তুনিশার মা বনিতা শর্মা। বলছেন, সিজানের কারণেই তুনিশার আত্মহনন।
বনিতার দাবি, মাদক সেবন করতেন অভিনেতা। আরও একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে থেকে তুনিশাকে ঠকিয়েছেন বলেও অভিযোগ। শুধু তাই নয়, তুনিশাকে বিয়ের প্রস্তাবও দেন সিজান। কিন্তু অন্য মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি মানতে পারছিলেন না তুনিশা।
২০ বছর বয়সী টিভি তারকার মৃত্যু ভারতের বিনোদন দুনিয়াকে হতবাক করেছে। তুনিশা ক্রমে ভারতজুড়ে পরিচিত মুখ হয়ে উঠছিলেন। একজন উদীয়মান তারকা ছিলেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটি বিশাল ভক্তগোষ্ঠী ছিলো।
মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে তুনিশা শর্মা ইনস্টাগ্রামে নিজের একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন যার ক্যাপশন ছিলো ‘যারা তাদের আবেগ দ্বারা চালিত তারা থামে না’। পোস্টটিতে আট লাখেরও বেশি লাইক এবং হাজার হাজার মন্তব্য রয়েছে। সবাই তুনিশার মৃত্যুর শোকাহত, অবাক।
উত্তর ভারতের চণ্ডীগড় শহরে জন্ম নেয়া তুনিশা শর্মা ছোটবেলা থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। তিনি সবেমাত্র ১৩ বছর বয়সে টিভি শোতে অভিনয় শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে বড় পর্দায় তার পথ তৈরি করেন, তার জন্য নিজেকে প্রস্তুতও করেছিলেন।
কিন্তু ছোট পর্দায় তার সাফল্য তাকে খ্যাতি এনে দেয়। তুনিশা বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন, লোককাহিনী আলী বাবা এবং চল্লিশ চোর দ্বারা অনুপ্রাণিত তার সর্বশেষ শোতে, তিনি একজন রাজকন্যার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।