ব্যাংক খাতে নগদ অর্থের মজুদ কমলেও, ঋণ বিতরণ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জানুয়ারি নাগাদ বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ১১ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
ব্যাংকারদের মতে, এটি করোনার ধকল কাটিয়ে অর্থনীতির গতি পুনরুদ্ধারের ইংগিত। তবে সব খাতের এবং ছোট মাঝারি গ্রাহকরা ঋণ পাচ্ছেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে আর্থিক খাত বিশ্লেষকদের।
করোনার অতি সংক্রামক ধরন ওমিক্রণের ছোবলে বিপর্যস্ত বিশ্ব অর্থনীতি। এতে বিপর্যস্ত হয়েছিলো বাংলাদেশের উৎপাদনশীল কর্মকাণ্ডও।
তখনো কারখানা সচল রেখেছেন উদ্যোক্তা আর শ্রমিকরা। করোনাকাল শেষ হয়নি, কিন্তু প্রকোপ কিছুটা কমায় নতুন বিনিয়োগের অর্থ খুঁজছেন উদ্যোক্তারা। আর তাতেই বছর ব্যবধানে ব্যক্তি খাতে ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
কিন্তু সব খাতে কি সমানভাবে ঋণের যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ জানান, সব খাতে না গেলেও প্রধান প্রধান খাতকে ঋণ দেয়া হচ্ছে। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে অর্থনীতিতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে পণ্য আমদানি ব্যয় বেড়েছে ৫৪ শতাংশের বেশি। এটি রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাড়ার হারের চাইতে অনেক বেশি। ফলে ব্যক্তি খাতের চাহিদায় এখন রীতিমতো নগদ অর্থের সংকট আবার দেখা যাচ্ছে ব্যাংকগুলোতে। তবে তার মতে এটি সাময়িক ধাক্কা মাত্র।
মোসলেহ উদ্দীন আহমেদ বলেন, ঋণের চাহিদা বেড়েছে, ডলারের চাহিদা বেড়েছে, রপ্তানি চাহিদা বেড়েছে। আর বিনিয়োগ ও নগদ অর্থের মধ্যে যে সামান্য অসামঞ্জস্য রয়েছে সেটিকে স্বাভাবিক হিসাবেই ধরে নেয়া যায়।
অন্যদিকে, ব্যক্তি খাতেরই ঋণ প্রবৃদ্ধিকেই সামগ্রিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ইংগিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে বছর শেষে তা খেলাপি আবার বাড়ে কিনা তা নিয়েও সংশয় আছে।
জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. জামাল উদ্দীন বলেন, এদেশে ব্যাংক মালিকরাই আমদানির সঙ্গে জড়িত। তাদের কাছে ঋণ গেলে খেলাপি সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: অব্যবহৃত ডাটা ও টকটাইম যুক্ত হওয়ার নতুন তারিখ ঘোষণা
তিনি বলছেন কর্মসংস্থান বেশি হয় খাতে ঋণ গেলে মানুষের জীবন যাত্রার বাড়ন্ত ব্যয় সহনীয় হবে, সেটি কিন্তু দেখা যাচ্ছে না।