দেশের শ্রম আইন ও অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) আইনে যেসব পরিবর্তন আনার মাধ্যমে শ্রম অধিকারের যে অগ্রগতি হয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রকে অবহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ।
সোমবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি। বাণিজ্য সচিব বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের শ্রম আইন সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধনী আনা হয়েছে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ আইনেও।
এসব পরিবর্তনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য ছিলো বলে উল্লেখ করেন তিনি। তপন কান্তি বলেন, তাদের চাওয়াগুলো পূরণ করার জন্য এসব সংস্কার এনেছিলাম।
তিনি জানান, শ্রম আইনে তিনবার পরিবর্তনসহ গত ১০ বছরে অনেক সংস্কার আনা হয়েছে। ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়েছে চারবার। আর শিল্পের কর্মপরিবেশ ও শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রেও আমরা ভালো অবস্থানে আছি।
‘শ্রম আইনের সংশোধন ও বেজা আইনের সংস্কারের মাধ্যমে শ্রম অধিকারের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। শিগগিরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চিঠির জবাবে এই অগ্রগতি তাদের জানানো হবে,’ বলেন বাণিজ্য সচিব। তিনি যোগ করেন, ‘তাই বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মত কোন পরিস্থিতি নেই।’
তপন কান্তি বলেন, ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা হয়েছে। জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। তাছাড়া কীভাবে শ্রমিক কল্যাণ আরো বাড়ানো যায় সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ দূতাবাসের বাণিজ্য বিষয়ক মিনিস্টার সেলিম রেজার লেখা একটি চিঠি ২০ নভেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।
যেখানে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি যে স্মারকটি ঘোষণা করেছেন, বাংলাদেশ তার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে এবং শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে এই নীতি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা রাষ্ট্রের ওপর আরোপের সুযোগ রয়েছে।
তবে বাংলাদেশকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই বলে এর আগে মন্তব্য তপন কান্তি ঘোষ।
এদিন বাণিজ্য সচিব বলেন, কারও দয়ায় নয়, পণ্যের গুণগত মান, আন্তর্জাতিক চাহিদা ও শ্রমিক অধিকার রক্ষা করেই তৈরি পোশাক রপ্তানি করছে বাংলাদেশ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিক মূল্যায়ন রিপোর্টে অনুযায়ী, বাংলাদেশের শ্রম আইনে ও শ্রম অধিকারের বিষয়গুলোতে বেশ কিছু প্রতিপালিত হয়েছে বলে জানান তিনি। তপন কান্তি বলেন, তবে তারা চায় আরও অগ্রগতি হোক।
এর আগে বাণিজ্য সচিব জানান, বাংলাদেশের পণ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ১৫ শতাংশের বেশি শুল্ক দিয়ে রপ্তানি হয়।
এদিন তিনি বলেন, যথেষ্ট ডিউটি দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি করে আসছে বাংলাদেশ।