চোরাই পথে দেশে আসা ভারতীয় চিনি ঠেকাতে সরকারের হস্তক্ষেপ চাইলো বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটির দাবি, চোরাই পথে আসা নিম্নমানের এই চিনি, বাজারে চাহিদার প্রায় ২৫ শতাংশই দখল করেছে। এতে সরকার বছরে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। অন্যদিকে নিম্নমানের চিনি কিনে প্রতারিত আর নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন ক্রেতারা।
রাজধানীর মৌলভীবাজার থেকেই দেশের মোট চাহিদার প্রায় ৩০ শতাংশ চিনি সরবরাহ হয়। চিনি শোধনাগার ও মিল থেকে চিনি এখানে আসে তারপর যায় বিভিন্ন জেলায়।
মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতি বলছে চোরাই পথে আনা চিনি কিছু অসাধু লোক দেশীয় ব্র্যান্ডের মোড়কেই বিক্রি করছে, ফলে মৌলভীবাজারে দেশীয় চিনির বিক্রি কমেছে অন্তত ৫০ শতাংশ।
বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবুল হাসেম বলেন, সিলেট তামাবিল, নেত্রকোণা, কুমিল্লার আখাউড়া বেল্ট দিয়ে প্রবেশ করে। আমাদের দেশীয় মিলের বস্তা বদলিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। যার জন্য সাধারণ ভোক্তারা বুঝতে পারছেন না কোনটা ভারতীয় চিনি আর কোনটা আমাদের চিনি।
এমন অবস্থায় মানহীন ভারতীয় চোরাই চিনির আগ্রাসন ঠেকাতে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়েছে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন।সংগঠনটির দাবি দেশীয় মিলগুলোতেই চাহিদার দ্বিগুণ চিনি উৎপাদন স্বক্ষমতা আছে।।
সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, আমরা যখন কাঁচামাল আনি তখন মান নিয়ন্ত্রণের একটা ব্যবস্থা আছে। একটা সিস্টেমের মাধ্যমে আমরা বাজারজাত করি। ভারতীয় চিনিটা যখন অবৈধভাবে আসে সাধারণভাবে এটার মান নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা নেই। আমাদের বাৎসরিক একটা চাহিদা আছে, সেভাবে আমরা বিনিয়োগ করি। ধীরে ধীরে মিলগুলো রুগ্ন হয়ে যাচ্ছে।
দেশীর চিনির বর্তমান খুচরা বিক্রি মূল্য প্রতি কেজি ১৪০ টাকা। আমদানিতে সরকারকে বিভিন্ন পর্যায়ে পরিশোধের পর প্রতি কেজি চিনিতে শুল্ক ৪০ থেকে ৪২ টাকা। অন্যদিকে চোরাই পথে আসা চিনির শুল্ক নেই তাই দামও কম।জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক এই চেয়ারম্যান বলছেন সমস্যার সমাধান খুঁজতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছেই মিল মালিকদের দাবি জানাতে হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মজিদ বলেন, চোরাই পথে আসা চিনি ঠেকানোর দায়িত্ব যার তার কাছেই বলতে হবে।
দেশে পাঁচটি বড় চিনি পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানের দৈনিকই উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি। যা দেশের মোট চাহিদার দ্বিগুণেরও বেশি।