ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার পর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে পুঁজিবাজার কয়েকদিন স্থিতিশীল থাকলেও আবার ফিরেছে পতনের ধারায়। আর এতে মার্জিন ঋণের ফাঁদে পড়ে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য দ্রুত মার্জিন ঋণের আইন পরিবর্তন আনতে হবে। আর তা করা না হলে ভবিষ্যতে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
প্রায় দেড় বছর ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট। নিম্নমুখী বাজারে মার্জিন ঋণের ফাঁদ থেকে বিনিয়োগকারীদের রক্ষ করতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিলো বলে তখন নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে বলা হয়।
এরপর গত জানুয়ারি মাস থেকে ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হয় ফ্লোর প্রাইস। এতে সাময়িকভাবে বাজারের সূচকের উত্থান ঘটে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। আবার পতনে নিমজ্জিত হয়েছে পুঁজিবাজারের সূচক।
ফ্লোর প্রাইজ তুলে নেয়ার প্রথম দিকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয়তার বাজার স্থিতিশীল থাকলেও এখন তা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে পতন ঠেকাতে যে ফ্লোর প্রাইস বসানোয় আদৌ কি শেষ রক্ষা হয়েছে বিনিয়োগকারীদের? ফ্লোর প্রাইসের আটকে শেয়ার লেনদেন বন্ধ থাকলেও থেমে থাকেনি মার্জিন ঋণের সুদের হার। চক্রবৃদ্ধিহারে বেড়েছে সুদ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পড়তি বাজারে জেনে বুঝেই সাইডলাইনে আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। মার্জিন ঋণের ফাঁদে পড়ে বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হলেও বাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত কোনো বাজারে কোনো সাপোর্ট দেবেন না তারা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিদিনই বাড়ছে ফোর্স সেলের চাপ। এতে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
আর ২০১০ সালের ধসের অভিজ্ঞতা থাকার পরেও মার্জিন ঋণের আইন সংশোধন না হওয়াকেও দুঃখজনক বলে মনে করছেন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালি।
পুঁজিবাজার ও কোম্পানি আইন বিশ্লেষক ব্যারিস্টার এ এম মাসুম বলেন, বিদ্যমান আইন পরিবর্তন না করেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা যে কোনো নিয়ম সংযোজন বিয়োজন করতে পারবেন।
বর্তমান বাজারে ১৬ শতাংশ হারে সুদে যারা মার্জিন ঋণ নিচ্ছেন তাদেরও সতর্ক থাকার কথা বলেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ পতনমূখী বাজারে ১৬ শতাংশের বেশি আয় হবে কিনা, তা নিয়েও ভাবার পরামর্শ দিয়েছেন।