ব্যাংকসহ অর্থনীতির সবচেয়ে বেশি ক্ষত-বিক্ষত সময় ছিলো বিদায়ী ২০২৪ সাল। ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে জিডিপির প্রবৃদ্ধি দেখানোসহ তথ্য-উপাত্তের নয়-ছয়ে খাদের কিনারায় পৌঁছেছিলো বাংলাদেশের অর্থনীতি। মেগা প্রকল্পে ইচ্ছেমতো ব্যয় বাড়িয়ে বিদেশে টাকা পাচারের কারণে অর্ধেকের নিচে নেমেছিলো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আওয়ামী লীগের বিদায়ের পরও রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়নি অর্থনীতির।
উন্নয়নের মহাসড়কে অর্থনীতি বা বিস্ময়কর উন্নয়ন কিংবা উচ্চ প্রবৃদ্ধির ঈর্ষণীয় অর্জন। উন্নয়নের গালভরা এসব বুলি নিয়মিতই শুনিয়ে আসছিলো পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। উন্নয়নের কথিত মহাসড়কে ওঠার কথা বলে ইচ্ছেমতো ব্যয়ে তৈরি হয় একেকটি মেগা প্রকল্প।
বড় বড় ব্রিজ, নদীর নিচে টানেল, কক্সবাজার দোহাজারী রেললাইন, কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিলাসী ভবন, পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল কিংবা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর অতিব্যায় নিয়ে আছে গুরুতর অভিযোগ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, জিডিপির প্রবৃদ্ধির কল্পিত হিসাব দিয়ে মেগা প্রকল্পে মেগা লুটপাটের আয়োজন ছিল বিদায়ী বছরসহ আওয়ামী লীগ শাসনামল।
লাগামহীন লুটপাট আর কমিশন বাণিজ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ে ব্যাংকখাত। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকসহ ৬-৭টি ব্যাংক দখল আর বেক্সিমকোসহ বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে ঋণের নামে হাতিয়ে নেয়া হয় প্রায় এক লাখ কোটি টাকা।
অর্থপাচার আর অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে ২০২১ সালে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ এক বছরের মাথায় নেমে আসে অর্ধেকে। অর্থনীতির এমন নৈরাজ্যের কারণে মূল্যস্ফীতিতে নাভিশ্বাস অবস্থা মানুষের। বিদায়ী বছরে অর্থনীতির ক্ষতি কাটিয়ে ওঠাই দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির অন্যতম চ্যালেঞ্জ।