১৯৭৬ সালে যাত্রা শুরু করা ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপ অফ ইন্ড্রাস্ট্রিজ আজ ৫৪টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের গর্বিত অংশীদার। নিত্যপণ্য থেকে শুরু করে এভিয়েশন বা সমুদ্রগামী জাহাজ, সর্বত্রই মেঘনার গর্বিত পদচারনা। প্রতিষ্ঠানটির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘মেঘনাপারের যাদুকর’ হিসাবে খ্যাত মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল জানান, বর্তমানে বিশ্বের ৫২টি দেশে মেঘনার পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। নিত্যনতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য।
১৯৭৬ সালে অনেকটা উদ্দেশ্যহীনভাবেই ‘কামাল ট্রেডিং’ নামে ছোট্ট একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে উঠে আসা মোস্তফা কামাল। ১৯৮৯ সালে মেঘনা ঘাটে ভেজিটেবল ওয়েল কারখানা দিয়ে শুরু হয় আজকের মেঘনা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের যাত্রা।
বর্তমানে ৫৪টি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন ৫০ হাজারেরও বেশি কর্মী। পরোক্ষভাবে মেঘনার সাথে জড়িয়ে আছে কোটিরও বেশি মানুষের রুটি রুজি। ৫০ বছর ধরে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় মানুষের আস্থায় এবং সমৃদ্ধিতে এক অপ্রতিরোধ্য প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে।
দীর্ঘ ৫০ বছরের এই সাফল্য যাত্রার কথা বলতে গিয়ে, রোববার রাজধানীতে কোম্পানিটির নিজস্ব কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এমজিআই’র চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, যাত্রাপথটা সহজ ছিল না। ছিলো পদে পদে বাধা আর আর্থিক সঙ্কট।
সততা, সাহস আর কাছের মানুষকে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভার ৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। স্থানীয় মুদ্রায় হিসাব করলে ৩৬ হাজার কোটি টাকা। সরকারকে রাজস্ব দিয়েছি ৬ হাজার কোটি টাকা।
নতুন নতুন কারখানা গড়াকে স্বপ্ন হিসাবে উল্লেখ করে দেশের অর্থনীতির অন্যতম এই ‘গেম চেঞ্জার’ বলেন, নতুন করে ইস্পাত, গ্লাস, পেপার মিল ও কেমিক্যালের চারটি আলাদা শিল্প-কারখানা চালু করতে যাচ্ছি। এর মধ্যে ইস্পাত ও গ্লাস কারখানা গড়ে তুলছি কুমিল্লা শিল্পাঞ্চলে। প্রতিটি কারখানাই করছি সর্বাধুনিক প্রযুক্তির।
তিনি বলেন, ২০২৬-এর মাঝামাঝি আশা করি ইস্পাত উৎপাদনে আসতে পারব। কাচ উৎপাদন শুরু হয়ে গেলে কাছের দেশ নেপাল, ভুটান, ভারতে রফতানির পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিদিন ৬০০ টন উৎপাদন সক্ষমতার কাচের যে প্রযুক্তি আনছি তাতে আমদানি প্রতিস্থাপক হিসেবে ভালো কাজে দেবে।
তিনি আরও যোগ করেন, বাকি দুই কারখানা পেপার মিল ও কেমিক্যালের দুই শিল্প-কারখানা করছি মেঘনা ইকোনমিক জোনে। আমার শিল্প-কারখানাগুলোয় এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের ওপর মানুষের প্রত্যক্ষভাবে কর্মসংস্থান হয়েছে। আর, পরোক্ষ কর্মসংস্থান কয়েক লাখ হবে নিশ্চিতভাবেই।
এমজিআই আজ দেশের কোটি মানুষের কাছে এক আস্থার নাম। বিশ্বের ৫২টি দেশে এর গর্বিত পথচলা। যাকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিতে চান এমজিআই’র চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল
বিনিয়োগেও ভূমিকা রেখে চলেছে মেঘনা গ্রুপ। দেশের তিনটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৩টি বিদেশী প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন এই সাহসী শিল্পপতি ও উদ্যোক্তা।