পট পরিবর্তনের পর হাত খুলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। ফলে হু হু করে দেশে আসছে রেমিট্যান্স! বছরের শুরুর মাস জানুয়ারিতেও ২১৯ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন রেমিটাররা।
যদিও জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেলো ৫ বছরে বিদেশ যাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা যেখানে বেড়েছে ৭ গুন। সেখানে এ সময়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে খুবই সামান্য। মাত্র ১ দশমিক ৩৮ গুন।
তবে, বিশেষজ্ঞরা বললেন, প্রশিক্ষিত শ্রমিক বিদেশে পাঠানো না গেলে প্রবাসী আয়ের উল্লম্ফন সম্ভব নয়।
জানুয়ারিতে দেশে এসেছে প্রায় ২১৯ কোটি ডলার। গত বছরের একই মাসের তুলনায় যা ৭ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ৩ দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। আর চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম সাত মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৫৯৬ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী জানান, গেলো অর্থ-বছরের প্রথম ৭ মাসের তুলনায় চলতি অর্থ-বছরের প্রথম ৭ মাসে ৩০৫ কোটি ডলার বা ২৩ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি এসেছে। মানুষের আস্থা ফিরে আসছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগের মাস ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৬৪ কোটি ডলার। একক মাস হিসেবে যা ছিলো সর্বোচ্চ। এর আগে একক মাসে সর্বোচ্চ ২৬০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০ সালের জুলাইতে।
অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, হিসেবের মধ্যে রেমিট্যান্স বেড়েছে।
আর্থিকখাত বিশেষজ্ঞ ফারুক মঈনউদ্দীন বলেন, মধ্যপ্রাচ্য থেকে টাকা আসার পরিমাণ আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।
তবে, জনশক্তি রপ্তানি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও, অনেকটা কচ্ছপ গতিতে এগুচ্ছে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির চাকা! জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেলে ৫ বছরে বিদেশ যাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা ২ লাখ থেকে বছরে গড়ে ১৪ লাখে পৌঁছলেও, এই সময়ে রেমিট্যান্স ১৮ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ২৫ বিলিয়নের ঘর ছুঁয়েছে মাত্র। অর্থাৎ ৫ বছরে ৭ গুন বেশি শ্রমিক বিদেশ গেলেও দেড় গুণও বাড়েনি প্রবাসী আয়।
ঠিক কত শ্রমিক এখন বিদেশে কাজ করে, দেড় না দুই কোটি? সে হিসেব নেই কারও কাছে! আবার মেয়াদ শেষ ও অসুস্থতার কারণে কত শ্রমিক দেশে ফেরত এসেছে কিংবা কত জন প্রবাসেই মারা গেছেন, তার কোন পরিসংখ্যানও নেই, পরিসংখ্যান ব্যুরোর কাছে!
বায়রা সাবেক সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, আমাদের যে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণগুলো দেয়া হয়, তা বাস্তব সম্মত না। আমার মনে হয়, প্রশিক্ষণের মতো খাতগুলোতে সরকারের আরো বেশি মনোযোগী হওয়া উচিত।