ইসলামী ব্যাংকের শীর্ষস্থানীয় আট কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে ব্যাংকটি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কর্মকর্তাদের চাপের মুখে তাদের বরখাস্ত করা হয়। এর মধ্যে একজন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) ও পাঁচজন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি)। বাকী দুজন ব্যাংকের দুটি বিভাগের প্রধান।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের সবাই এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে।
এর মধ্যে বহুল আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলমের একান্ত সচিব আকিজ উদ্দিন ও ইসলামী ব্যাংকের ঋণের দায়িত্বে থাকা মিফতাহ উদ্দিনও রয়েছেন। তারা দুজনই ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ছিলেন।
সরকার পতনের পর থেকে ব্যাংকটিকে ‘এস আলম ও পটিয়া মুক্ত’ করার আন্দোলন করছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে কিউ এম হাবীবুল্লাহ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আকিজ উদ্দিন, মোহাম্মদ সাব্বির, মিফতাহ উদ্দিন, কাজী মো. রেজাউল করিম ও মো. আবদুল্লাহ আল মামুন। এ ছাড়া প্রধান অর্থ পাচার প্রতিরোধ কর্মকর্তা (ক্যামেলকো) তাহের আহমেদ চৌধুরী ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল মো. নজরুল ইসলামকে বরখাস্ত করেছে ব্যাংকটি।
২০১৭ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ইসলামী ব্যাংককে ‘জামায়াতমুক্ত’ করার উদ্যোগ হিসেবে এর মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। এরপর সাড়ে সাত বছরে নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এস আলম এবং এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজশাহীর নাবিল গ্রুপ।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৬ আগস্ট এস আলমের নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের ব্যাংক থেকে বের করে দেন বিক্ষুব্ধ ব্যাংকাররা।
এরপর গত ৭ এবং ৮ আগস্ট ব্যাংকারদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখলের পর পদায়ন পাওয়া এক্সিকিউটিভসহ (নির্বাহী কর্মকর্তারা) যারা অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের নিয়োগ বাতিলের দাবি করেন। এমন অবস্থায় গত বুধবার এস আলমের আমলে পদোন্নতি পাওয়া অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) কায়সার আলী ব্যাংকে এলে তাকে জোর করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
কর্মকর্তারা ইসলামী ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠনের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে লুটেরাদের বের করে দেওয়ার দাবি জানান।