এই সরকার গঠনের পর প্রথম বাজেট তাই এবারের বাজেট অন্যান্যবারের চেয়ে হবে ব্যতিক্রম এবং এতে ইশতেহারের অগ্রাধিকারের প্রতিফলন ঘটবে বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।
বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, বাজেট ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে রেখে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা ও মুদ্রানীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে আসন্ন বাজেটে।
টানা চতুর্থবার সরকার গঠনের পর প্রথম বাজেট সংসদে পেশ করা হবে বৃহস্পতিবার। সেই বাজেটে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্য আর বাস্তবতার ব্যবধান কতটুকু; সাথে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব পাচ্ছে কোন বিষয়গুলো এমন প্রশ্ন ছিল অর্থ প্রতিমন্ত্রীর কাছে।
জবাবে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেটের অন্যতম লক্ষ্য আরও অনেক কিছুর সাথে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রেখে নিত্যপণ্যের বাজারে মানুষজনকে আরেকটু স্বস্তি দেয়া আর মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টেনে অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠা।
তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারাটাকে অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে সরবরাহ নিশ্চিত করা ও সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালী করার প্রস্তাব রাখা হবে এ বাজেটে।
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে টেকসই, সাশ্রয়ী, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জ্ঞানভিত্তিক উদ্ভাবনী কার্যক্রমের ওপর এ বাজেটে গুরুত্বারোপ করা হবে বলেও জানান তিনি। ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ ও দৃশ্যমান অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো খাতে দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে সার্বিক মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় সম্পদ সঞ্চালন করা হবে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও কৃষি পুনর্বাসনে সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সার, বীজ ও সেচে প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা।
চলতি অর্থ বছরের তুলনায় এবারের বাজেটের আকার ৪.৬২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বাজেটে বিদেশি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। ব্যাংক থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ঋণ সুদ পরিশোধের ব্যয় এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।
এছাড়াও বাজেটে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলেও জানান অর্থ প্রতিমন্ত্রী।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক বেষ্টনীর আওতা অর্থাৎ দরিদ্র মানুষজনকে সহায়তা আরও বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা থাকবে বলেও জানান অর্থ প্রতিমন্ত্রী।