জটিল রোগের ঝুঁকিতে থাকা করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর শঙ্কা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে, আমেরিকার ওষুধ প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান মার্কের তৈরি মুখে খাওয়ার পিল- মোলনুপিরাভির।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) অন্তর্বর্তী ট্রায়ালের ফলাফলে এ তথ্য জানানো হয়। শিগগিরই জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য মার্কিন ওষুধ প্রশাসনে আবেদন করবে প্রতিষ্ঠানটি।
অনুমোদন পেলে এটাই হবে কোভিড চিকিৎসায় প্রথম অনুমোদিত মুখে খাওয়ার ওষুধ। একে করোনা মহামারি রোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়েছে পাঁচ দিনের কম, উপসর্গ মৃদু থেকে মাঝারি, স্থুলকা, বয়স্ক বা জটিল রোগের ঝুঁকিতে, এমন ৭৭৫ জনকে নিয়ে গবেষণা করে আমেরিকার ওষুধ প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান মার্ক অ্যান্ড কোম্পানি।
মূলত ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসার জন্য তৈরি ওষুধটিকে কোভিড ভাইরাসের জেনেটিক কোডের ভুলগুলোকে চিনিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে করে শরীরে এটি ছড়িয়ে পড়তে না পারে।
শুক্রবার অন্তর্বর্তী ট্রায়ালের ফলাফলে বলা হয়, ৭৩ জন রোগীকে তাদের তৈরি মোলনুপিরাভির পিল দেয়া হয়। ১৪১ জন রোগীকে দেয়া হয় নিষ্ক্রিয় ওষুধ বা প্লাসিবো।
১২ ঘণ্টা পরপর তাদের ওষুধ খাওয়ানো হয়। চলে পাঁচ দিন। দেখা গেছে, মোলনুপিরাভির খাওয়ার এক মাসের মধ্যে কাউকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি। মারা যায়নি কেউই।
আরও পড়ুনঃ সাত মাস পর শনাক্ত ছয়শর’ নিচে, ২৪ মৃত্যু
অন্যদিকে, প্লাসিবো সেবনকারীদের মধ্যে ১৪ দশমিক ১ শতাংশকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে। আর আট জনের কোভিডে মৃত্যু হয়েছে।
মোলনুপিরাভির করোনা ভাইরাস মোকাবিলার ভাবনা পাল্টে দিতে যাচ্ছে বলে আশাবাদী মার্কের প্রধান নির্বাহী। এটি অতিসংক্রামক ডেলটাসহ সব ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কার্যকর বলে জানানো হয়। তবে সেবনকালে প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষকে সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়মনীতি মানতে হবে।
চলতি বছর এক কোটি ডোজ ওষুধ তৈরি করবে মার্ক অ্যান্ড কোম্পানি। প্রতি ডোজ ৭০০ ডলার করে। ইতোমধ্যে ১৭ লাখ ডোজের অর্ডার করেছে মার্কিন সরকার।
ভারতের কয়েকটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়া হবে। যারা নিম্ন, মধ্যম আয়ের দেশে এই ওষুধ সরবরাহ করবে। দাম নির্ধারণ হবে মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে।
মোলনুপিরাভির ট্যাবলেটের ট্রায়াল আছে তৃতীয় ধাপে। একই ধরনের ওষুধ উন্নয়নে গবেষণা করছে ফাইজার আর রোচে হোল্ডিংও।
একাত্তর/এআর