পশ্চিমবঙ্গের বেলঘরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় এ বার ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ দিল ভারতের হাইকোর্ট। কাকলি সরকার নামে ওই নারীর মৃত্যুর পাঁচ মাস পর, মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এর আগে গত ২২ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে ওই নার্সিংহোমে ভর্তি হন কাকলি। ২৫ এপ্রিল সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃতের পরিবারের সদস্যদের দাবি, বেলঘরিয়ার ওই নার্সিংহোমে অঙ্গ বিক্রির চক্র চলছে— এ কথা কাকলিই জীবিতাবস্থায় তাঁদের বলেছিলেন। তাঁদের দাবী, মৃত্যুর আগে কাকলি জানান— তাঁর অঙ্গপ্রত্যঙ্গও বিক্রির পরিকল্পনা করছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। কাকলির ওই বক্তব্যকে প্রথমে কেউ গুরুত্ব দেননি। কিন্তু কাকলির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়। অভিযোগ উঠেছে, ওই নার্সিংহোমের এক নার্স একটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই কাকলির মৃত্যু হয়। এর পর ওই ঘটনার বিচার চেয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনের দ্বারস্থ হয় পরিবার। স্বাস্থ্য কমিশন, ওই পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয়।
কিন্তু কাকলির মৃত্যুর বিচার চেয়ে অনড় তাঁর পরিবার। বেলঘরিয়ার ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে সিআইডি বা অন্য তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের দাবিতে তাঁরা হাই কোর্টে আবেদন করেন। পাশাপাশি, ৩০২ ধারা অর্থাৎ খুনের ধারায় মামলা শুরু করার আর্জিও জানানো হয়। এরপর গত ১৩ সেপ্টেম্বর মৃতের দেহ দ্বিতীয়বারের জন্য ময়নাতদন্ত করতে নির্দেশ দেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: তালেবান মন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন মুফতি ইব্রাহীম
একইসঙ্গে, মৃতের শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ রয়েছে কি না বা কোনও অঙ্গ বদলে ফেলা হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতেও ওই চিকিৎসক দলকে নির্দেশ দেয় আদালত। এর প্রেক্ষিতে এনআরএস হাসপাতালের তিন চিকিৎসককে নিয়ে বিশেষ দল গঠন করে ময়নাতদন্ত হয়। কিন্তু পরিবারের দাবি, কাকলির দেহের অবস্থা এতটাই খারাপ যে তা শনাক্ত করা মুশকিল। তা অন্য কারও মৃতদেহ হতে পারে। পরিবারের এমন দাবির পর মঙ্গলবার ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।
সূত্র- আনন্দবাজার
একাত্তর/এসএ