সম্প্রতি চিরহরিৎ বন আমাজন ঘুরে আসা আমেরিকান এক নারীর চোখে বিরল মায়সিস নামের এক বিরল সংক্রমণ ধরা পড়েছে। শুধু তাই নয় ভারতের দিল্লিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সফল অপারেশনের মাধ্যমে ওই নারীর শরীর থেকে তিনটি জ্যান্ত শুয়োপোকা বের করা হয়েছে।
সোমবার এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ওই নারীর চোখ, গলা এবং বাহুতে অপরাশেন করে প্রায় দুই সেন্টিমিটার লম্বা তিন শুয়োপোকা বের করা হয়েছে। তবে তাদের অপরাশেনের পর আর কোন ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে হাসপাতালটি।
মাইয়াসিস হলো মানবকোষে এক ধরনের মাছি লার্ভার সংক্রমণ। সাধারণত গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে এ ধরনের সংক্রমণ দেখা দেয়। তবে এটি খুবই বিরল। কিন্তু ওই মার্কিন নারীর বেলায় বিরল এই সংক্রমণের খোঁজ পায় চিকিৎসকরা।
তার ডান উপরের চোখের পাতা ফুলে যাওয়া, লালভাব ও ঝাপসা দেখার অভিযোগ নিয়ে দিল্লির ফোরর্টিস হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যান। সেখানকার চিকিৎসক বসন্ত কুঞ্জ জানান, এই নারী চার থেকে ছয় সপ্তাহ ধরে তার চোখের পাতার ভেতরে কিছু নড়াচড়া টের পাচ্ছিলেন।
এই নারী জানান, নিজ দেশের চিকিৎসাকদের সঙ্গে তিনি তার সমস্যা দেখাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারা চোখ থেকে মায়াসিস বের করতে ব্যর্থ হন। তাকে কিছু নিরাময় জাতীয় ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দিয়ে ছেড়ে দেন সেখানকার চিকিৎসকরা।
ফোরর্টিস হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রধান ডা, মোহাম্মদ নাদিম জানান, মায়াসিস বিরল এক ধরনের সংক্রমণ। ফলে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তাদের বিষয়টি দেখতে হয়েছে। গোটা বিষয়টিই অনেক দ্রুততম সময়ের মধ্যেই শেষ করতে হয়েছে।
তিনি জানান, এই আমেরিকান পর্যটকের দুই মাস আগে আমাজন বন ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে সেখান থেকেই সংক্রমণ ঘটেছে তার শরীরে। এরপর থেকে এই নারী তার চামড়া ও চোখের নিচে কিছু একটা নড়াচড়া অনুভব করছিলেন।
হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নোরালা ইয়াঙ্গান খুব দ্রুত ও সফলতার সঙ্গে রোগীর শরীর থেকে তিনটি জীবন্ত শুয়োপোকা বের করতে সক্ষম হন। একটি বের করা হয়েছে তার ডান চোখের পাতা থেকে। দ্বিতীয়টি তার ঘাড়ের পেছন এবং তৃতীয়টি ডান বাহু থেকে।
আরও পড়ুন: মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই বিদ্রোহীদের সঙ্গে রাশিয়ার চুক্তি
সব ধরনের সতর্কতা অনুসরন করে অপারেশনটি ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে শেষ করা হয়। এ সময় কোন ধরনের চেতনানাশক প্রয়োগ করা হয়নি। অপারেশনের পর কিছু হালকা ওষুধ ও পরামর্শ দিয়ে আমেরিকান নারীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মিয়াসিস সংক্রমণের চিকিৎসা না হলে মানবদেহে অনেক ধরনের গুরুতর সমস্যা তৈরি হতে পারে এবং সেসব থেকে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।