একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম সফল কথাসাহিত্যি হারুকি মুরাকামি। বাংলাসহ সারাবিশ্বে ৫০টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে এই জাপানি লেখকের বই। যেকোনো আন্তর্জাতিক ঘটনা নিয়ে বরাবরই সরব তিনি। তাই চুপ থাকেননি ইউক্রেন-রুশ সংঘাত নিয়েও। জানালেন শান্তির আহবান।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) টোকিও এফএমে (রেডিও) "যুদ্ধের সমাপ্তি সংগীত" শিরোনামে এক অনুষ্ঠানে এ আহবান জানান তিনি। ৫৫ মিনিটের ওই অনুষ্ঠানে পল ও মেরির গাওয়া 'ক্রুয়াল ওয়ার', ডোরের 'আননোন সোলজার' ছাড়াও ১৯৫০ সালে লেখা এড ম্যাককার্ডির গান 'লাস্ট নাইট আই হ্যাড দ্য স্ট্রেঞ্জেস্ট ড্রিম' -এর মতো গানগুলো শ্রোতাদের সাথে শোনার পাশপাশি এসব নিয়ে আলোচনাও করেন মুরাকামি।
"সংগীতের কি যুদ্ধ থামানোর শক্তি আছে?" এই প্রশ্ন দিয়ে অনুষ্ঠান আরম্ভ করেন মুরাকামি। তারপর তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে এর জবাব 'না'। তবে এর মাধ্যমে শ্রোতাদের এমন ধারণা দেওয়া যায় যে, যুদ্ধ এমন একটি বিষয় যেটিকে আমাদের থামাতেই হবে।
জেমস টেইলরের "নেভার ডাই ইয়াং" শিরোনামের সংগীতটি পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় মুরাকামি বলেন, যুদ্ধে তরুণদের জীবন দেওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক।
তিনি মার্কিন নাগরিক অধিকার আন্দোলনের শ্রদ্ধেয় নেতা মার্টিন লুথার কিং'এর উদ্ধৃতি দিয়ে সতর্ক করে বলেন যে, জার্মানিতে অ্যাডলফ হিটলার যা করেছিল তার সবই যে বৈধ ছিল, এ বিষয়টি আমাদের কখনো ভুলে যাওয়া উচিত হবে না।
মুরাকামি কর্তৃত্ববাদ মেনে নেওয়ার বিপদের বিষয়টি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমাদের নেতাদের অন্ধভাবে অনুসরণ করা থেকে কোনো ধরনের ইতিবাচক ফলাফল আসবে না।
তিনি বলেন, যদিও এটি (যুদ্ধ) কার্যকর বলে মনে হতে পারে,তবে এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, যদি জিনিসগুলি অন্ধকারের দিকে মোড় নেয়, যেখানে আমরা শেষ হয়ে যাই, তা সত্যিই বিপজ্জনক।
আরও পড়ুন: ভারতকে হারিয়ে আরেকটি স্বর্ণ বাংলাদেশের
১৯৪৯ সালে, জাপানের কিয়োটোয় তার জন্ম। তিনি একাধারে উপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, অনুবাদক, সাংবাদিক। দি গার্ডিয়ান-এর স্টিভেন পুলের তার মতে, মুরাকামি তার কর্ম ও অর্জনের পৃথিবীর সেরা জীবিত ঔপন্যাসিকদের একজন। সাহিত্যে তার অবদানের জন্য বিভিন্নসময় মুরাকামি বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে বিশ্ব ফ্যান্টাসি পুরস্কার, ফ্র্যাঙ্ক ও'কনর আন্তর্জাতিক ছোট গল্প পুরস্কার, ও ফ্রান্ৎস কাফকা পুরস্কার। মুরাকামির উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে আ ওয়াইল্ড শিপ চেজ (১৯৮২), নরওয়েজিয়ান উড (১৯৮৭), দি ওয়াইন্ড-আপ বার্ড ক্রোনিকেল (১৯৯৪-৯৫), কাফকা অন দি শোর (২০০২) এবং ওয়ানকিউএইটিফোর (২০০৯-১০)।
একাত্তর/আরবিএস