পাকিস্তানে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। গত জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু এ বন্যায় এখন পর্যন্ত ছয়শ' শিশুসহ এক হাজার সাতশ' জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ হাজার। এমন পরিস্থিতিতে দাতা সংস্থাগুলোর থেকে আরও সহযোগিতা চেয়েছে দেশটি।
সোমবার (৩ অক্টোবর) দেশটির সরকারের প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যে এমনটি দেখা গেছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও এখনও হাজার হাজার মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করছে। এরইমধ্যে জাতিসংঘ পাকিস্তানের জন্য তার সাহায্যের আবেদন বাড়িয়েছে। দেশটিতে কমপক্ষে ৫০ লাখ মানুষ মারাত্মক খাদ্য সংকটের সম্মুখীন।
পাকিস্তানে জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয়কারী জুলিয়েন হারনিস সোমবার বলেছেন, বিশ্ব সংস্থাটি এখন বন্যা-ত্রাণ প্রচেষ্টার জন্য আটশ' ১৬ মিলিয়ন ডলার চাইছে। এদিকে গেলো আগস্ট মাসে বন্যা শুরুর পর একশ' ৬০ মিলিয়ন ডলারের প্রাথমিক আবেদন করা হয়েছিল।
জেনেভায় একটি মিডিয়া ব্রিফিংয়ে হারনিস সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এখন মৃত্যু ও ধ্বংসের দ্বিতীয় ওয়েভে প্রবেশ করছি। শিশুদের অসুস্থতা বৃদ্ধি পাবে এবং এটি ভয়ানক হবে যদি না আমরা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং পানি এবং স্যানিটেশন পরিষেবার বিধান বাড়ানোর জন্য সরকারকে সহায়তা না করি।
পাকিস্তান সরকার এবং জাতিসংঘ উভয়ই বন্যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে বারবার দায়ি করেছে।
দেশটিতে এক লাখ ৩০ হাজার গর্ভবতী নারীসহ কমপক্ষে ১৬ লাখ নারীর জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রয়োজন। অন্যদিকে শিশুদের জন্যও প্রয়োজন নানা ওষুধ ও খাবার।
জানা গেছে, পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধু প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে অঞ্চলে প্রায় আটশ' জন মারা গেছে। এরপর দক্ষিণ-পশ্চিমের বেলুচিস্তান এবং উত্তর-পশ্চিমের খাইবার পাখতুনখোয়াতেও বেড়েছে মৃত্যু।
আরও পড়ুন: জাপানের ওপর দিয়ে গেল উ. কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র, সতর্কতা জারি
বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ঘনবসতি পূর্ণ শহরের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান যেন বন্যার পানিতে তলিয়ে না যায় সে জন্য কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে অব্যাহত রয়েছে উদ্ধার অভিযান।
জুলাই ও অগাস্টে পাকিস্তানজুড়ে ৩৯১ মিলিমিটার (১৫ দশমিক ৪ ইঞ্চি) বৃষ্টি হয়েছে, যা ৩০ বছরের গড় থেকে প্রায় ১৯০ শতাংশ বেশি। বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সিন্ধু প্রদেশে গড়ের চেয়ে ৪৬৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
একাত্তর/আরবিএস