রোববার (১৩ জুন) নতুন জোট সরকার গঠনের পক্ষে ভোট দিয়েছে ইসরাইলের পার্লামেন্ট। পার্লামেন্টে ৬০-৫৯ ভোটে অনুমোদন পায় নতুন জোট সরকার। এখন নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন নাফতালি বেনেত এবং লিকুদ পার্টির প্রধান হিসেবে নেতানিয়াহু হবেন বিরোধী দলীয় নেতা।
নেতানিয়াহু যুগের অবসান ঘটাতে মতাদর্শিক বিরোধিতা স্বত্ত্বেও নতুন জোট গঠন করেছে ইসরাইলের ৮টি রাজনৈতিক দল। জোটের সমঝোতা অনুযায়ী, ইয়ামিনা পার্টির নেতা বেনেত ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর তিনি ইয়েশ আতিদ পার্টির নেতা ইয়ার লাপিদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। লাপিদ দুই বছর ক্ষমতায় থাকবেন।
পার্লামেন্টে নীরবে বসে এই ভোটপর্ব পর্যবেক্ষণ করেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ফলাফল নির্ধারিত হয়ে গেলে বেনেতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পার্লামেন্ট কক্ষ ছেড়ে যান তিনি। পরে ফিরে এসে কালো মাস্ক পরিহিত নেতানিয়াহুকে বিরোধী দলীয় নেতার আসনে বসতে দেখা গেছে।
সুদীর্ঘ ৭৩ বছরের ইতিহাসে বেনেতের জোটের মতো কোনও সরকার দেখেনি ইসরাইল। জোটে থাকা দলগুলোর আদর্শগত ভিন্নতা আকাশ-পাতাল। এই প্রথম ইসরাইলে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের দলও সরকার গঠনে অংশ নিচ্ছে। নতুন সরকারে ৮ জন নারী মন্ত্রী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানা গেছে যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক। নতুন জোট সরকার অনুমোদন পাওয়ায় বার বার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের চক্রাবর্তেরও অবসান ঘটলো। বিগত দুই বছরে ইসরাইলে ৪ টি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০০৯ সাল থেকে টানা ১২ বছর ৫ মেয়াদে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু বিগত ক'বছরে তার জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। তার বিরুদ্ধে ঘুষ, জালিয়াতি ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে এবং এসব অভিযোগে বিচারও চলছে।
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়লেও রাজনীতি ছাড়ছেন না নেতানিয়াহু। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পার্লামেন্টে দেওয়া সবশেষ ভাষণে সমর্থকদের তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আবারও প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হবেন তিনি। চিন্তার চেয়েও দ্রুততম সময়ের মধ্যে 'বিপদজনক' নতুন এই জোট সরকারের পতন ঘটবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
একাত্তর/জো