ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার রেশ না কাটতেই এবার অধিকৃত গোলান মালভূমিতে ইসরাইলি অবস্থান লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়েছে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
রোববার সকালের দিকে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা এই হামলা চালায় বলে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, অধিকৃত গোলান মালভূমিতে অবস্থিত ইসরাইলের নাফাহ, ইয়ার্ডান এবং কিলা সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। তবে এই হামলায় কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে সম্পর্কে বিবৃতিতে কিছু বলা হয়নি।
এখন পর্যন্ত কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ইসরাইল এবং লেবাননের গণমাধ্যমও কোনো তথ্য দেয়নি।
ইসরাইলের কান টিভির বরাতে পার্সটুডে জানিয়েছে, গোলান মালভূমির কাৎজরিন ইহুদি বসতির কাছে অবস্থিত একটি সামরিক ফাঁড়ি লক্ষ্য করে কমপক্ষে ৩০টি রকেট ছোড়া হয়েছে। এসময় আশপাশের এলাকাগুলোতে সাইরেন বাজানো হয়।
হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরাইল সম্প্রতি দক্ষিণ লেবাননে যে হামলা চালিয়েছে তার জবাবে এই রকেট হামলা চালানো হয়।
এদিকে শনিবার সকালেও থেকে লেবাননের হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ইসরাইলের উত্তরাংশে আপার গ্যালিলিতে একঝাঁক রকেট দিয়ে হামলা চালায় বলে জানা গেছে।
এর আগে গেলো ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায় দখলদার ইসরাইল। ওই হামলায় ইরানের সাত সামরিক কর্মকর্তাসহ অন্তত ১৩ জন নিহত হন। জবাবে রোববার ইসরাইলি ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইরান।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের এ মিশনের নাম দেয়া হয়েছে ‘ট্রু প্রোমিজ’ বা ‘সত্য প্রতিশ্রুতি'।
ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পক্ষ নিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে পারে এমন আশঙ্কাও করেছিলেন অনেকে।
হামলার পরপরই এর নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাব না দিতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি আহবান জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ইরানে পাল্টা হামলা চালানো হলে যুক্তরাষ্ট্র তাতে অংশ নেবে বলেও জানান জো।
অন্যদিকে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি এক বিবৃতিতে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় পৃষ্ঠপোষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, ইরানের স্বার্থে আঘাত হানার যেকোনো প্রচেষ্টায় আমেরিকা অংশগ্রহণ করলে মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন লক্ষ্যবস্তুগুলোতে ‘নিষ্পত্তিমূলক ও অনুশোচনা সৃষ্টিকারী’ হামলা চালানো হবে।